গোটা দেশের পাশাপাশি এ রাজ্যেও রাম মন্দির বিষয়ক একাধিক প্রতারণার ফাঁদ বিছিয়েছে প্রতারকরা। কোথাও রাম মন্দিরের অন্দরমহলের ছবি পরিদর্শনের টোপ, আবার কোথাও উদ্বোধনের দিন পুজো দেওয়ার অছিলায় আর্থিক প্রতারণার জাল বুনেছে সাইবার অপরাধীরা। জন সাধারণের ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেওয়ার মোক্ষম জাল ছড়ানো হয়েছে গোটা শহর জুড়ে।
প্রাথমিকভাবে, উদ্বোধনের কিছুদিন আগে থেকেই অযোধ্যার নব নির্মিত মন্দিরের অন্দরমহলের দৃশ্য, ভিডিয়ো দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ফাঁদ পাতা হয়। সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন কিউআর কোড তৈরি করে। সেটা ছড়িয়ে দেওয়ার হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে স্ক্যান করলেই ঘরে বসে মিলবে মন্দিরের অন্দরমহলের দৃশ্য দেখার সুযোগ এরকম টোপ দেওয়া হতে থাকে। এই প্রতারণার জাল পশ্চিমবঙ্গ সহ বিহার, উত্তর প্রদেশ, দক্ষিণ ভারতের একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
এইরকম ধরনের কোনও কিউআর কোড মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে দেওয়া হয়নি, এরকম সচেতনতা মূলক প্রচার চালানো হলে সাইবার অপরাধীরা তৈরি করে নতুন ছক। সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এবার মন্দির উদ্বোধনের ঠিক আগে প্রথম দিন অনলাইনে পুজো দেওয়ার সুযোগ এবং মন্দির উদ্বোধনের দৃশ্য লাইভ দেখানোর নাম করে তৈরি হয় নানা ওয়েব লিংক এবং কিউ আর কোড। সেখানে প্রতীকী কিছু রাম মন্দির ও মূর্তির ছবি সাজিয়ে জন সাধারণের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর ফাঁদ পাতা হয়। সেখানেই জন সাধারণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ব্যাঙ্ক ডিটেলস নিয়ে আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়েছে। মন্দির উদ্বোধনের আগে থেকেই এই প্রতারণার কর্মকাণ্ড শুরু করে দিয়েছে অপরাধী চক্র। বিশেষত, বাড়িতে থাকা বয়স্কদের ‘টার্গেট‘ করে অপরাধ সংগঠিত করতে চাইছে প্রতারকরা।
কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলের এক আধিকারিক জানান, ‘লাইভ ফটো অফ রাম মন্দির’ বা এইরকম বিভিন্ন বার্তা দিয়ে মোবাইলে মেসেজ পাঠাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। নির্দিষ্ট লিঙ্কে ক্লিক করে সাধারণ মানুষ ওয়েবসাইটের ভেতরে ঢুকলেই প্রতারণার শিকার হতে পারেন। সে ব্যাপারে সতর্কতা জারি করা হচ্ছে।
সাইবার ক্রাইমের সেলের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা পুলিশের তরফে সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে অনলাইনে অযাচিত এই ধরনের লিংক বা কিউ আর কোড ব্যবহার না করার পরামর্শ সব সময়েই দেওয়া হয়। রাম মন্দির সংক্রান্ত এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্যেও সচেতন করা হচ্ছে নাগরিকদের। কোনওরকম ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য বা ভোটার, আধার সংক্রান্ত কোনও তথ্য না দেওয়ার জন্য সতকর্তা জারি করা হচ্ছে।