‘আপনায় স্থাপিয়াছ’… কটাক্ষ বিরোধীদের – rabindranath tagore poem in the opposition party leaders speech


এই সময়: বঙ্গবাসীর রামভক্তিকে তুলে ধরতে রামমন্দির উদ্বোধনের প্রাক্কালে কাজী নজরুলের শরণ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর রামমন্দির উদ্বোধনের দিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা ঘুরেফিরে এল বিরোধীদের বক্তব্যে।

সোমবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল রবীন্দ্রনাথের ‘দীনদান’ কবিতার লাইন – সে মন্দিরে দেব নাই কহে সাধু!/রাজা কহে রোষে,/দেব নাই! হে সন্ন্যাসী, নাস্তিকের মতো কথা কহ।/রত্ন সিংহাসন-পরে দীপিতেছে রতনবিগ্রহ/শূন্য তাহা?/শূন্য নয়, রাজদম্ভে পূর্ণ/ সাধু কহে, আপনায় স্থাপিয়াছ,/জগতের দেবতারে নহে।

এ দিন এক্স হ্যান্ডলে এই কবিতা পোস্ট করে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী লেখেন – ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নরেন্দ্র মোদীর মতো শাসকদের উদ্দেশেই এটা লিখেছিলেন।’ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও এই কবিতার শরণ নিয়েছেন।

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এক্স-এ রবীন্দ্রনাথের ছবি-সহ পঙক্তিগুলি উল্লেখ করে লেখেন – ‘রাজদম্ভের কুৎসিত প্রকাশ দেশজুড়ে। রবীন্দ্রনাথ আজও কত প্রাসঙ্গিক, সে বোধ যাদের নেই, তারাই আজ দেশ ও রাজ্যের প্রশাসক।’ প্রায় একই সুরে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘অন্যদের বাদ দিয়ে শুধু একটা ধর্মকে প্রোমোট করতে পারব না।’ সরব জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাও।

রামমন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন দেশজুড়ে উন্মাদনা, তেমনই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার অনেকে। সোমবার মহানগরের রাজপথে ফ্যাসিবাদ বিরোধী মহামিছিলে পা মেলান কয়েক হাজার মানুষ। দেশজুড়ে হিন্দুত্ব ও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং গণ-সংগঠন।

অরাজনৈতিক ব্যানারে কর্মসূচি আয়োজিত হলেও যোগ দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিজেপি এবং সিপিএম ছাড়া দেশের ১৯০টি রাজনৈতিক দল ও গণ-সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে যোগ দেন। ছিলেন তৃণমূলের বেশ ক’জন নেতা-মন্ত্রী। এ ছাড়া এসইউসিআই, পিডিএস, খেতমজুর কমিটি, হকার সংগ্রাম কমিটি এবং বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছিলেন মিছিলে।

সেটি শুরু হয় ওয়েলিংটন স্কোয়ার থেকে। শেষে নেতাজি ইন্ডোরে প্রতিবাদ সভাও হয়। সেখানে হাজির ছিলেন সমাজকর্মী তিস্তা শীতলওয়াড়, প্রাক্তন বিচারপতি বিজি খোলসাপাতিল, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সাংসদ শামিরুল ইসলাম, নাদিম খান, সিপিআই(এম এল) নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, হকার নেতা শক্তিমান ঘোষ-সহ অনেকে। মণিপুর, অরুণাচল, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র থেকে আসেন ন্যাশনাল হকার ফেডারেশনের নেতারা।

সভায় ব্রাত্য বলেন, ‘বিজেপি এবং আরএসএস বিভাজনের খেলা খেলছে। ১৯৫১ থেকেই ওরা বলে আসছে, সেক্যুলারিজ়ম পাশ্চাত্য ধারণা। কিন্তু ভারত শুধু একটা দেশ না, এটা একটা অপূর্ব ধারণা। এখানে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য আছে। তাকে ভেঙে দিয়ে দেশের সম্পদকে ওরা (নিজেদের) বন্ধুদের হাতে তুলে দেবে, সেটা কিছুতেই ভারতের মানুষ মেনে নেবে না।’

দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের অভিযোগ, বিজেপি এবং আরএসএস সংবিধান বদলের চেষ্টা করছে। তাঁর কথায়, ‘যেটা সরকারের করার কথা, সেটা কর্পোরেটের হাতে তুলে দিচ্ছে। হিন্দু ধর্মকে হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *