নেতাজির ১২৭তম জন্মবার্ষিকী বারাসতে একটি সভায় হাজির ছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সেখানেই তিনি উল্লেখ করলেন, নেতাজি সম্পর্কে নানান মতামতের কথা। তিনি বলেন, ‘অনেক জাতি-উপজাতি-ভাষা-ধর্ম রয়েছে। তবে দেশ এই সমস্ত কিছুর উপরে, এমনই মনে করতেন।’ তাঁর কথায়, ‘আকণ্ঠ দেশপ্রেম ওঁর জীবনের মূল মন্ত্র ছিল।’ জাতি, ধর্ম, বর্ণের উপরে দেশকে এগিয়ে রাখেন নেতাজি, সেই বক্তব্য উঠে আসে মোহন ভগবতের কথায়। তিনি বলেন ‘আমরা জানি নেতাজির স্বপ্ন অধরা রয়ে গেছে, কিন্তু সেই স্বপ্ন কে পূরণ করবে? উনি জানতেন এই স্বপ্ন একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। আমরা সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগোচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত বছর কলকাতার শহিদ মিনারে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী পালন করে আরএসএস। সংঘের নেতাজি প্রীতি নিয়ে কটাক্ষ করে বিরোধীরা। যদিও, গত বছরের সভা থেকেই আরএসএস প্রধান স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নেতাজির লক্ষ্য এবং সঙ্ঘের লক্ষ্য এক। ব্যক্তির স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থে কাজ করাই লক্ষ্য নিয়েছিলেন দেশ নায়ক। সেই পথেই পরিচালিত হয় সঙ্ঘ বলে দাবি করেন ভাগবত।
তবে আরএসএসের সঙ্গে নেতাজির চূড়ান্ত মত বিরোধ ছিল বলে মত প্রকাশ করেছিলেন নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাফ। সুভাষচন্দ্র বসু এবং আরএসএস-বিজেপির মতাদর্শগত ফারাক রয়েছে বলে মত ব্যক্ত করেন তিনি। সুভাষ-কন্যা অনিতা জানিয়েছিলেন, আরএসএস বা বিজেপির মতাদর্শের সঙ্গে নেতাজির সব সম্প্রদায়কে সম্মান জানানোর মতাদর্শকে কোনও ভাবেই এক করে দেখানো যায় না। তিনি জানিয়েছিলেন, নেতাজি বন্দনার মধ্যে দিয়ে বিজেপি এবং আরএসএস নিজেদের লক্ষ্যপূরণে ব্যস্ত বলেও দাবি ছিল তাঁর। গোঁড়া হিন্দুত্বের মতাদর্শের সঙ্গে নেতাজির ভাবাবেগ কোনওভাবেই মেলে না বলে জানিয়েছিলেন নেতাজি কন্যা।
প্রসঙ্গত, আরএসএস ঘনিষ্ঠ বিজেপিকে গত কয়েক বছরে একাধিক পদক্ষেপ করতে দেখা যায়। বিজেপি সরকারে আসার পর ২০১৮ সালে আন্দামান সফরের সময় রস আইল্যান্ডের নামকরণ নেতাজির নামে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ২০২২ সালে নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত প্রসারিত কর্তব্য পথে নেতাজির বিশাল মূর্তি উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।