Hooghly News : চুঁচুড়ায় মুড়ি খেয়ে হাঁসের মৃত্যু, ময়নাতদন্তে পাঠাল পুলিশ – hooghly chinsurah police station sends 3 ducks body to postmortem


হাঁসের ময়নাতদন্ত!শুনতে অবাক লাগলেও এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল হুগলি। জেলার চুঁচুড়া সিংহীবাগানের বাসিন্দা ইতি বিশ্বাস। পশুপালন ও ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালান। স্বামী রোগে ভুগে বিছানায়। একমাত্র ছেলে ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত। সেই ইতি বিশ্বাসের ১০টি হাঁসের মধ্যে ৩টি হাঁস শনিবার হঠাৎ মারা যায়। ইতি বলেন, ‘হাঁসগুলি ছাড়ার জন্য হাঁসের ঘর খুলি। তারপর হঠাৎ দেখতে পাই ৩টি হাঁস কিছু মুড়ি খেয়ে ছটফট করতে করতে জলে চলে যায়। মুড়ির প্যাকেট তুলে দেখি এক অদ্ভূত গন্ধ রয়েছে তাতে,সন্দেহ হয়। এরপরেই স্থানীয় সদস্যকে জানাই। তিনি পুলিশের দারস্থ হতে বলেন। পুলিশে জানালে তারা বাড়ি গিয়ে তদন্ত করে জানায় পশু হাসপাতালে যেতে। হাসপাতাল বলে পুলিশের অভিযোগ পত্র লাগবে।’

এদিকে এমন করতে করতে দিন পেরিয়ে যায়। শেষে বুধবার হুগলি জেলা পরিষদের মৎস ও প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তীর দারস্থ হন ইতি বিশ্বাস। তাঁর হস্তক্ষেপে অবশেষে মৃত হাঁসগুলির ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতায় পাঠান হয়। ইতি বলেন, ‘হাঁসের ঘর খুলতেই খাবার দেখতে পেয়ে খেতে যায় হাঁসগুলি। মুড়ির মধ্যে জল দিয়ে বিষ মাখিয়ে রেখে গিয়েছিল। সেই খাবার আমরা দিইনি। কিছুক্ষণ পরেই দেখি হাঁসগুলো টলমল করতে করতে জলে চলে যাচ্ছে। খাবার খেয়ে আগে কোনদিনও এরকম হয়নি। হঠাৎ কেন এমন হল? তখন মুড়ি শুকতেই দেখি বিশ্রী গন্ধ বেরোচ্ছে। এরপরে মুড়ি ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার পর ঠোঙাটা রেখে দিই। বুঝতে পারি কেউ শত্রুতা করে করেছে। স্থানীয় সদস্যর কাছে যাই, তাঁকে গিয়ে পুরো ঘটনার কথা জানাই। সারাদিন পর সন্ধ্যা হয়ে গেলেও হাঁস না ফেরায় খুঁজে দেখি পুকুরের পারে বসে রয়েছে। তাদের তাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে আসি। ঘরে ঢুকিয়ে তালা বন্ধ করে দিই। কিন্তু মন মানছিল না। কখন সকাল হবে হাঁস দেখব! সকাল দশটার সময় দেখি তিনটে হাঁস মরে পড়ে রয়েছে।’

ইতির কথায়, ‘নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারিনি। ডিম পাড়া হাঁসের এভাবে মৃত্যু? এরপরেই আমি থানায় ছুটে আসি। পুলিশ তড়িঘড়ি বাড়িতে হাজির হয় তদন্তের জন্য। বরফ চাপা দিয়ে রেখে দিই মৃত হাঁসগুলিকে। এরপরেই আজ মৃত হাঁসগুলিকে নিয়ে চুঁচুড়ায় রাজ্য প্রাণি স্বাস্থ্য কেন্দ্র যাই। আমি চাই আমার হাঁসগুলো কী ভাবে মরল তার তদন্ত হোক।’

এই প্রসঙ্গে হুগলি জেলা মৎস ও প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তী বলেন, ‘একজন অসহায় মহিলার তিনটে হাঁস মারা গিয়েছে। আইনের কচকচানিতে তিন দিন ধরে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ময়নাতদন্তের জন্য জেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের সেই পরিকাঠামো নেই। তিনটে হাঁসেরই ময়নাতদন্ত করা হবে। তবে কলকাতার স্টেট ফরেন্সিক ল্যাবরেটারিতে পাঠানো হবে। এরপরেই তিনি বুঝতে পারবেন তার হাঁসগুলোকে সত্যিই বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছিল কি না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *