এদিকে এমন করতে করতে দিন পেরিয়ে যায়। শেষে বুধবার হুগলি জেলা পরিষদের মৎস ও প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তীর দারস্থ হন ইতি বিশ্বাস। তাঁর হস্তক্ষেপে অবশেষে মৃত হাঁসগুলির ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতায় পাঠান হয়। ইতি বলেন, ‘হাঁসের ঘর খুলতেই খাবার দেখতে পেয়ে খেতে যায় হাঁসগুলি। মুড়ির মধ্যে জল দিয়ে বিষ মাখিয়ে রেখে গিয়েছিল। সেই খাবার আমরা দিইনি। কিছুক্ষণ পরেই দেখি হাঁসগুলো টলমল করতে করতে জলে চলে যাচ্ছে। খাবার খেয়ে আগে কোনদিনও এরকম হয়নি। হঠাৎ কেন এমন হল? তখন মুড়ি শুকতেই দেখি বিশ্রী গন্ধ বেরোচ্ছে। এরপরে মুড়ি ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার পর ঠোঙাটা রেখে দিই। বুঝতে পারি কেউ শত্রুতা করে করেছে। স্থানীয় সদস্যর কাছে যাই, তাঁকে গিয়ে পুরো ঘটনার কথা জানাই। সারাদিন পর সন্ধ্যা হয়ে গেলেও হাঁস না ফেরায় খুঁজে দেখি পুকুরের পারে বসে রয়েছে। তাদের তাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে আসি। ঘরে ঢুকিয়ে তালা বন্ধ করে দিই। কিন্তু মন মানছিল না। কখন সকাল হবে হাঁস দেখব! সকাল দশটার সময় দেখি তিনটে হাঁস মরে পড়ে রয়েছে।’
ইতির কথায়, ‘নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারিনি। ডিম পাড়া হাঁসের এভাবে মৃত্যু? এরপরেই আমি থানায় ছুটে আসি। পুলিশ তড়িঘড়ি বাড়িতে হাজির হয় তদন্তের জন্য। বরফ চাপা দিয়ে রেখে দিই মৃত হাঁসগুলিকে। এরপরেই আজ মৃত হাঁসগুলিকে নিয়ে চুঁচুড়ায় রাজ্য প্রাণি স্বাস্থ্য কেন্দ্র যাই। আমি চাই আমার হাঁসগুলো কী ভাবে মরল তার তদন্ত হোক।’
এই প্রসঙ্গে হুগলি জেলা মৎস ও প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্মাল্য চক্রবর্তী বলেন, ‘একজন অসহায় মহিলার তিনটে হাঁস মারা গিয়েছে। আইনের কচকচানিতে তিন দিন ধরে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ময়নাতদন্তের জন্য জেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের সেই পরিকাঠামো নেই। তিনটে হাঁসেরই ময়নাতদন্ত করা হবে। তবে কলকাতার স্টেট ফরেন্সিক ল্যাবরেটারিতে পাঠানো হবে। এরপরেই তিনি বুঝতে পারবেন তার হাঁসগুলোকে সত্যিই বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছিল কি না।’