এদিকে, নেতাজির জন্মদিনে ছুটি ঘোষণার দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরে কথা বলেছে সিপিএমও। মঙ্গলবার মালদার ইংরেজবাজার পুরসভার তরফে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তৃণমূলের পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। সেই মঞ্চেই দেখা যায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে। তিনিও নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি তোলেন।
অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সোমবার অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। নেতাজির জন্মদিবসে ছুটি ঘোষণার দাবি জানাতে গিয়ে সেই প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, ‘এ দেশে রাজনৈতিক প্রচারের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়, কিন্তু যাঁরা দেশের জন্য জীবন দেয়, তাঁরা বসে বসে কাঁদেন।’
নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়েও এদিন আক্ষেপ প্রকাশ করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। নেতাজির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘তিনি চলে যাওয়ার পরে তাঁর কী দশা হয়েছিল, সেটা আমরা আজও জানি না। তাঁর উপর কী অত্যাচার হয়েছিল, কোথায় ছিলেন, তিনি কি লুকিয়ে ছিলেন, তাঁকে কোথায় পাঠানো হয়েছিল, আমরা তাও জানি না। নেতাজি বহু প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন এবং থাকবেন।’
নেতাজির জন্মদিবসে তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেল থেকে অভিযোগ করা হয়, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নেতাজি সম্পর্কে উদাসীন। তার উদাহরণ দিতে গিয়ে নেতাজির তৈরি করা প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়া এবং তাঁর জন্মদিবসে জাতীয় ছুটি ঘোষণা না করার বিষয়টিকে হাতিয়ার করেছে জোড়াফুল শিবির।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার দাবি করেছেন, ‘নেতাজিকে যদি কেউ সম্মান দিয়ে থাকেন তিনি আর কেউ নন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনিই মূর্তি স্থাপন এবং নেতাজির ফাইল সামনে আনার বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন।’ তাঁর কথায়, ‘নেতাজি প্রধানমন্ত্রী হলে ভারত ভাগ হতো না। আমরা নেতাজির আদর্শকে মান্যতা দিয়ে থাকি।’
নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আর্জি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লিখেছেন। সুপ্রিম কোর্টেও জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। কয়েক বছর আগেই নেতাজির জন্মদিবসকে ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার আবার এই দিনটিকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছে।
এদিকে, কলকাতায় নেতাজি জন্মজয়ন্তীতে বামেদের মিছিল থেকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘বাম সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশপ্রেম দিবস হিসেবে পালন করা হতো। কিন্তু এখন আর হয় না। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোন মুখে ছুটি দাবি করে তৃণমূল?’