একলা চলো নীতি
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার ইঙ্গিত দিয়েই দিয়েছেন, বাংলায় ‘একলা চলো’ রণনীতির ব্যাপারে। মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকেই আভাস দিয়ে দেন প্রস্তুতি নেওয়ার। এই পরিস্থিতিতে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। রাজনৈতিক মহলের দাবি, পাঁচবারের সাংসদ অধীর চৌধুরীর কাছে এবার গড় ধরে রাখায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবেই। সেক্ষেত্রে বিজেপি এবং তৃণমূল কাকে অধীরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় খাড়া করছে তার উপরই নির্ভর করছে লোকসভার চিত্র।
তৃণমূলের ট্রাম্প কার্ড
তৃণমূল সূত্রে খবর, এই মূহূর্তে দুটি নাম বাতাসে ভাসছে। কালক্রমে দু’জনেই অধীর চৌধুরীর হাতে গড়া রাজনীতিক। একজন অধীরের একদা শিষ্য হিসাবে পরিচিত কান্দির বিধায়ক তথা বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার। অপর একজন সদ্য প্রাক্তন বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়।
অধীরের রেকর্ড
২০১৯ সালে অধীরের বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রতীকে লড়েছিলেন অপূর্ব সরকার। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অপূর্ব সরকারকে কংগ্রেস হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্দল প্রতীকে জিতিয়েছিলেন অধীর। ২০১৪ সালে অধীর চৌধুরী রাজ্যে সর্বাধিক ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। ২০১৪ সালে অধীর চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫৮৩৫৪৯টি। তৃণমূল প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেনের প্রাপ্ত ভোট ছিল ২৬৯৮২। তিনবারের সাংসদ আরএসপি প্রার্থী প্রমোথেশ মুখোপাধ্যায় পেয়েছিলেন ২২৫৬৯৯ ভোট। অধীর চৌধুরী ৫৫৬৫৬৭ ভোটের ব্যবধানে জিতে রাজ্যে শীর্ষে ছিলেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সেই শিষ্যর কাছে কার্যত হারের মুখ থেকে বেঁচেছিলেন। ২০১৯ সালে অধীর চৌধুরী পান ৫৯১১০৬ ভোট। মোট ভোটের ৪৫.৪৩ শতাংশ। অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব সরকার মোট ভোটের ৩৯.২৩ শতাংশ পেয়ে প্রপ্ত ভোট ৫১০৪১০। অধীর চৌধুরী মাত্র ৮০৫৯৬ ভোটে জিতেছিলেন। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ১৪৩০৩৮ ভোট। হিন্দু ভোটের একটা বড় অংশ অধীর চৌধুরীকেই সমর্থন করেছিলেন। বিজেপি নিজের ভোট ধরে রাখতে পারলে অধীর চৌধুরীর ভাগ্যে ২০১৯ সালের সাংসদের শিকে ছিঁড়ত না। এমনটাই দাবি রাজনৈতিক মহলের।
কী বলছে জেলা তৃণমূল?
তবে জোট শেষ পর্যন্ত না হলে কী ভাবে অধীরের বিরুদ্ধে লড়াই হবে, তার ছক প্রস্তুত। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘এবার মুর্শিদাবাদের তিনটি আসনেই আমরা জিতছি। তার ব্লুপ্রিন্টও তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘প্রার্থী রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবে। দল আমাকে প্রার্থী করলে দাঁড়াব।’ এবার পরিস্থিতি নির্ভর করছে বিজেপি ও তৃণমূল শিবিরের প্রার্থীর উপর। যদিও জয় নিয়ে নিশ্চিত অধীর চৌধুরী। বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি বলেন, তৃণমূলকে তিনবার হারিয়ে সাংসদ হয়েছি। মমতা বন্দ্যপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, ‘পারলে আপনি দাঁড়িয়ে আমাকে হারিয়ে দেখান।’