সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি দুর্ঘটনা নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের এসপি আমনদীপকে তিরস্কার করেন রাজীব। বিস্মিত ডিজিপি-র বক্তব্য, ‘আপনাদের এত ক্যাজুয়াল মনোভাব কেন? ভিআইপি’দের নিরাপত্তার ব্যাপারে আরও সিরিয়াস হোন।’ রাজীব কুমারকে সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের কার্যনির্বাহী ডিজি পদে বসানো হয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের সচিবের দায়িত্বও সামলাচ্ছেন।
এদিনের বৈঠকে তিনি ছাড়াও ছিলেন এডিজি (সিকিওরিটি) পীযূষ পাণ্ডে, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম এবং এডিজি (আইবি)-র মনোজ ভার্মার মতো উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তারা। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী-সহ ভিভিআইপি’দের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করার নির্দেশ দিয়েছেন ডিজিপি।
তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা ভিভিআইপি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন, তাঁরা ডিউটি চলাকালীন মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারবেন না। ভিভিআইপি’রা কোন রুট দিয়ে যাতায়াত করবেন, সে ব্যাপারে পুলিশের স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। সেই মতো হোমওয়ার্ক করে নিতে হবে, যাতে ভিআইপি কনভয়ের সামনে অন্য কোনও গাড়ি ঢুকে না পড়ে।
বুধবার বর্ধমানের গোদার মাঠে একটি সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তাঁর হেলিকপ্টারে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় সড়কপথে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশ সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমানের এসপি’র কনভয়ের সঙ্গে থাকা একটি গাড়ি হঠাৎ চলে আসে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে।
বিপদ এড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির চালক দ্রুত ব্রেক কষেন। তার ফলে বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলেও আচমকা ব্রেক কষায় গাড়ির ঝাঁকুনিতে ড্যাশবোর্ডে মাথা ঠুকে যায় মুখ্যমন্ত্রীর। কলকাতার ফিরে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার গাড়িচালক বুদ্ধি করে ব্রেক না কষলে মরেই যেতাম। জানলাটা খোলা ছিল। ড্যাশবোর্ডটা আমার মাথায় লেগেছে। যদি কাচ বন্ধ থাকত, আমার মৃত্যুও হতে পারত।’
পুলিশ সূত্রের খবর, এদিনের মিটিংয়ে ডিজি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কোনওরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। তার জন্য সবসময়ে সতর্ক থাকতে হবে পুলিশকে। পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, এদিনের মিটিং পূর্ব নির্ধারিতই ছিল। যদিও সেই বৈঠকের অনেকটা সময় জুড়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।