Operation Theater,প্রসবের সময়ে মানসিক চাপ কমাতে ওটিতে গান মহিলার – woman sings in operation theater during childbirth at nadia santipur nursing home


এই সময়, কৃষ্ণনগর: যেন বাড়ির বৈঠকখানায় আনন্দ-গান। কিংবা খুশিতে চানঘরে গান। প্রসব যন্ত্রণা ও অপারেশন টেবিলের যাবতীয় ভয় কাটিয়ে সন্তান প্রসবের সময়ে দিব্যি গান করলেন প্রসূতি। একজন নন। নদিয়ার শান্তিপুরে চলতি সপ্তাহের দু’দিনে দুই প্রসূতি একাধিক গান শোনালেন অপারেশনের টেবিলে। একজন গাইলেন একাধিক রবীন্দ্র সংগীত। অন্যজন শোনালেন কৃষ্ণের গান।

গত বুধ ও শুক্রবারে দুই প্রসূতির সেই ‘আনন্দ গান’ ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সন্তান প্রসবের সময়ে প্রসূতির মানসিক চাপ কমাতে ওটিতে ঘরোয়া পরিবেশ তৈরি করেছিলেন নদিয়ার শান্তিপুরের গাইনো চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারি। শান্তিপুরের একটি নার্সিংহোমে ২৬ জানুয়ারি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন স্থানীয় রথতলার বাসিন্দা রাজনন্দিনী ঘোষ।

২৬ তারিখের আশপাশে যে কোনও দিনে তাঁর সন্তান প্রসব হতে পারে জেনে চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারির কাছে তিনি আব্দার করেছিলেন, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনেই যেন তাঁর সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করা হয়। সেই আব্দার মানা হলেও ভয় পাচ্ছিলেন রাজনন্দিনী। চিকিৎসক পবিত্র ব্যাপারি বলেন, ‘ওই প্রসূতির চেহারা বেশ ভারী। ওজন ১০৭ কেজি। তার উপর আগের সন্তান বাঁচেনি বলে আগে থেকেই ভয় পাচ্ছিলেন। সাহস জোগাতে একদম বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়েছিলাম। গান জানেন শুনে ওকে ওটিতেই গান শোনাতে বলেছিলাম। রাজনন্দিনী কৃষ্ণের গান শুরু করেছিলেন। গান করতে করতেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন রাজনন্দিনী।’

২৪ জানুয়ারি একই নার্সিংহোমে ওই চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি থেকে সন্তান প্রসবের সময়ে তিনটি রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে অবাক করেছিলেন বেদান্তি মুখোপাধ্যায় সান্যাল নামের আরেক মহিলা। বেদান্তির শ্বশুরবাড়ি শান্তিপুরের মতিগঞ্জে। পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি।

বেদান্তি বলেন, ‘আমার বাবা শান্তিপুর শহরের একজন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাঁর ডাক পড়ত। তাই বাড়িতে গানের একটা পরিবেশ ছিলই। তবে বাবার মতো গান গাইতে পারি না। সন্তান প্রসবের আগে থেকেই এই ডাক্তারবাবুর অধীনে চিকিৎসায় ছিলাম বলে একদিন ভয়ের কথাটাও বলে ফেলেছিলাম। আর কথায় কথায় একদিন বলেওছিলাম আমি গান গাইতে পারি।

ডাক্তারবাবু সেদিন আর কিছু বলেননি। তবে প্রেসক্রিপশনের মাথার এক পাশে লিখে গান কথাটা ছোট করে লিখে রেখেছিলেন। তখনও বুঝতে পারিনি ব্যাপারটা কী। ওটিতে যখন বেশ ভয় পাচ্ছি তখন ডাক্তার বাবু বললেন, ‘এ বার শুনব তোমার গান। আমি শুরু করেছিলাম এ কী লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ । তারপর আরও একটা। ভয় উধাও হয়ে গিয়েছিল।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *