ফুটবলের প্রতি প্রথম থেকেই ভালোবাসা রয়েছে কবিতার। বিয়ের পরেও সেই ভালোবাসায় ছেদ পড়েনি। তবে তার জন্য তাঁকে অনেক গুঞ্জনা শুনতে হয়েছে প্রতিবেশী ও শ্বশুর বাড়ির কাছে। তবে তাঁর জেদের কাছে হার মেনেছে সবকিছুই। ফুটবলকে বহন করে জীবনের রাজপথে দৌড়ে চলেছেন এই উদীয়মান ফুটবলার। ছোটবেলায় আর্থিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ার সেভাবে কোচিংয়ের সুযোগ পাননি। তবে হাল ছাড়েননি। নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে উঁচু-নিচু বন্ধুর পথকেও মসৃণ করেছেন। বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে হরিপাল স্টেশন থেকে কলকাতায় পৌঁছাতে হয় প্র্যাকটিস করতে। বর্তমানে শ্রীভূমি এফসি-র সুজাতা করের কাছে অনুশীলন করছেন তিনি। পরপর দু’বছর কন্যাশ্রী কাপে চ্যাম্পিয়ন করেছেন নিজের টিমকে। কলকাতার একাধিক ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। এছাড়া দু’টি ন্যাশনাল ও দু’টি ইউনিভার্সিটি ফুটবল টিমেও খেলেছেন। ২০২৩ সালে মহিলা ফুটবলার কন্যাশ্রী কাপে শ্রীভূমির হয়ে আটটি গোল করেন তনি। আগামীতে তাঁর ইচ্ছা ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলে জায়গা করে নেওয়ার।
কবিতা বলেন, ‘অভাবের সংসারে খেলে যতটুকুই উপার্জন হয় তা দিয়েই সংসার চালে। স্বামী একজন ভাগচাষি। অর্থের অভাবে বড় কোনও জায়গায় খেলার সুযোগ পাচ্ছি না। কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলে ভালো হয়। আগামী দিনে জাতীয় মহিলা ইন্ডিয়া টিমের জার্সি গায়ে ফুটবল খেলতে চাই। তার জন্য আমাকে আরও বেশি করে পরিশ্রম করতে হবে। দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে প্র্যাকটিস করতে যাওয়া সম্ভব হয় না। যদি কলকাতায় থেকে প্র্যাকটিস করা যায় তাহলে ভালো হয়। তার জন্য কেউ যদি সাহায্য করেন তাহলে আগামী দিনে অনেক দূর এগোতে পারবো।’
কবিতার স্বামী নিরঞ্জন বলেন, ‘বিয়ের পর অনেকেই খেলতে দেয় না, কিন্তু স্ত্রী আমাকে জানিয়েছিল সে অনেক বড় জায়গায় খেলতে চায়। আমি তাকে কখনও বাধা দিইনি, বরং তাকে উৎসাহিত করেছি। বিয়ের পরেও অনেক কথা শুনতে হয়েছে। অন্যের কথায় কান না দিয়ে স্ত্রীকে খেলায় এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছি। তবে সে নিজেও কঠোর পরিশ্রম করেছে। তাই সরকারের কাছে আবেদন, কোনও চাকরি পেলে তবে তার পরিশ্রম সার্থক হবে।’