অধিকারীদের গড় কাঁথি পুরসভার নির্বাচন নিয়ে অতীতে নানা প্রশ্ন তুলেছিল পদ্ম শিবির। সেই সময় পুর নির্বাচনের ২১টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ছিল ১৭টি আসন, বিজেপি ঝুলিতে ছিল ৩টি আসন, আর নির্দল প্রার্থী পান ১টি আসন। তৃণমূল জয়লাভ করার পরও দলের অন্দরে ছিল বিস্তর জলঘোলা। কে হবেন কাঁথি পুরসবার চেয়ারম্যান, সেই নিয়ে চলতে থাকে নানান আলোচনা। একাধিক শিবিরের টানাপড়েনের পর শেষ পর্যন্ত বর্ষীয়ান কাউন্সিলর সুবল মান্নাকে চেয়ারম্যানের আসনে বসায় রাজ্য নেতৃত্ব।
সম্প্রতি সাংসদ শিশির অধিকারীর স্তুতি ও তাঁকে ‘গুরুদেব’ বলে সম্বোধন করার বিপাকে পড়েন সুবল মান্না। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শুরু হয় চরম বিতর্ক। জল গড়ায় রাজ্য এবং পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতর পর্যন্ত। চরম বিড়ম্বনায় পড়ে দল। অগত্যা অস্বস্তি ঢাকতে সুবলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। এদিকে পালটা দলীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অনৈতিকভাবে তাঁকে সরানোর অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুবল মান্না। যদিও সমগ্ৰ বিষয়ে কোর্টের পর্যবেক্ষণ আসার আগেই ১৬ কাউন্সিলের সম্মতিক্রমে সুবলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়।
চেয়ারম্যান পদ থেকে সুবল মান্না অপসারিত হওয়ার পর উপপৌরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি অস্থায়ী পৌরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু স্থায়ী পুরপ্রধান না থাকায় যাবতীয় কাজে সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। ব্যাহত হচ্ছিল পৌর পরিষেবা প্রদানও। এবার তাই রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে বিশেষ বৈঠকে দলের হুইপ মত কাঁথি পৌরসভার নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হল সুপ্রকাশ গিরির নাম। আর ভাইস চেয়ারম্যান হলেন নিরঞ্জন মান্না। সুপ্রকাশ চেয়ারম্যান হওয়ায় খুশি তাঁর অনুগামীরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনা জেলার রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।