বৃহস্পতিবার নদিয়া জেলায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মমতার বক্তৃতায় উঠে আসে মহুয়ার প্রসঙ্গ। প্রসঙ্গত, লোকসভা থেকে মহুয়া মৈত্রকে সাসপেন্ড করার পরেও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দলনেত্রী। মহুয়াকে নিয়ে দলের অবস্থানের যে কোনও পরিবর্তন হয়নি, সেটা এদিন ফের বুঝিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের অনুষ্ঠান থেকে বলেন, ‘মহুয়াকে ওঁরা তাড়িয়ে দিয়েছে, কেন? কারণ, মহুয়া মানুষের কথা বলত। তোমরা জোর করে তাড়িয়ে দিতে পারো, কিন্তু মানুষের ভোটে মহুয়া জিতবেই।’ মমতার সংযোজন, আমি বিশ্বাস করি, মানুষ ফের ওঁকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে আনবে।
মহুয়া মানুষের কথা বলত
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রসঙ্গত, লোকসভায় ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগ তুলে মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এথিক্স কমিটি। গত ডিসেম্বর মাসে তাঁকে লোকসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। যদিও, তাঁর বহিষ্কারের পরেও দল যে তাঁর পাশে আছে, এই বহিষ্কারের ঘটনার পেছনে আদতে বিজেপির ষড়যন্ত্র আছে বলে দাবি করা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে।
নদিয়া জেলার কৃষননগর এবং রানাঘাট কেন্দ্রের মধ্যে একটি আসন গতবার এসেছিল তৃণমূলের ঝুলিতে। কৃষ্ণনগর এলেও রানাঘাট কেন্দ্রটি হাতছাড়া হয়েছিল রাজ্যের শাসক দলের। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদের নাম না করেও এদিন সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রানাঘাট থেকে একজনকে আপনারা জিতিয়েছিলেন। মা – বোনেরা জানান, তিনি কী করে বেড়াচ্ছেন? কোনও কাজকর্ম নেই। এবার কিন্তু, রানাঘাটেও আমাদের সমর্থন দেবেন। দয়া করে এটা মনে রাখবেন।’
প্রসঙ্গত, নদিয়া জেলায় একাংশ ভোটার রয়েছে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সম্প্রতি সময়সীমা দিয়েছে বিজেপি। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই এই আইন লাগু হওয়ার ব্যাপারে জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। নদিয়ার এদিনের সভা থেকে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের ফের বিরোধিতা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এনআরসি আমি করতে দেব না। আর সিএএর নামে মিথ্যা কথা বলছে।’ সভায় উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে মমতা জানান, মতুয়ারা নাগরিক নন। আমরা সবাই নাগরিক। মতুয়ারা তো সবরকম সরকারি সুবিধা পান। মমতার যুক্তি, ‘এগুলো হচ্ছে ওদের রাজনৈতিক চাল। এই চালে বিশ্বাস করবেন না। এসব করে আপনাদের বিচ্ছিন্ন করতে চায়।’