Mamata Banerjee: বিজেপিকে আউট করতে ‘অল আউট’ পথে মমতা – west bengal cm mamata banerjee attacks on bjp before lok sabha election


এই সময়, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: আঞ্চলিক দলশাসিত রাজ্যে ‘মাতব্বরি’র কারণে লোকসভা ভোটে কংগ্রেস সারা দেশে ৪০টি আসন পাবে কি না, তা নিয়ে শুক্রবারই সংশয় প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর শনিবার তিনি বার্তা দিলেন, বিজেপিকে পরাস্ত করতে ‘অল আউট’ চেষ্টা করবেন। দেশের সব আঞ্চলিক ও জাতীয় দল যদি একই মনোভাব নিয়ে এগোয়, তা হলে বিজেপি দিল্লির মসনদে থাকতে পারবে না বলেও মনে করছেন মমতা। নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ছোটখাটো মতপার্থক্য মেটাতে তাঁর দিক থেকে সমস্যা নেই বলেও এ দিন ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

একাধিক কারণে আসন ভাগাভাগি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সমঝোতা-সূত্র বেরোয়নি। একলা লড়াই করার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা। রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় সিপিএমের উপস্থিতি, অধীর চৌধুরীর লাগাতার জোড়াফুল-বিরোধিতার কারণে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কে বড় ‘গ্যাপ’ তৈরি হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ। এই পরিস্থিতিতে হাত শিবিরের দিল্লির নেতাদের একাংশের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে জোড়াফুলের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে অসম, মেঘালয়ে তৃণমূলকে আসন ছাড়বে কংগ্রেস।

আগামী সপ্তাহেই দিল্লি সফরে যাবেন মমতা। তখন তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসার চেষ্টা করতে পারেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে রেড রোডে মমতার ধর্নায় শনিবার উপস্থিত হন পলিটিক্যাল অ্যাকটিভিস্ট যোগেন্দ্র যাদব। মমতার পাশে দাঁড়িয়ে শনিবার যোগেন্দ্র বলেন, ‘দেশের সমস্ত নাগরিক, রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সমস্ত নেতাকে অনুরোধ করছি, নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রাখুন। বড় মন নিয়ে আমাদের বড় লড়াই করতে হবে। এই বড় লড়াইয়ে ভারত জিতবে। আমার সঙ্গে সবাই বলুন — জয় বাংলা, জয় হিন্দ।’

ইন্ডিয়া জোট গঠনে মমতা বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। পাটনা, দিল্লি, বেঙ্গালুরুতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। মমতা বাংলায় কংগ্রেসকে দু’টি আসন ছাড়ার প্রস্তাব দিলেও হাত শিবির তাতে রাজি না হওয়া পশ্চিমবঙ্গে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’র সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না-রাখার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও যোগেন্দ্র এ দিন বলেন, ‘দেশের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে চিন্তিত পুনের যুবকরা মমতাকে চিঠি দিয়েছেন। সেখানে তাঁরা বলেছেন, দিদি আপনি উদার মন নিয়ে নেতৃত্ব দিন। আপনি সবাইকে একজোট করুন। তাই দেশের বর্ষীয়ান নেতা হিসেবে আপনাকে অনুরোধ করছি, দেশকে এই সঙ্কট থেকে রক্ষা করুন।’

Mamata Banerjee News: BJP-কে সাহায্য করতে জোট করেছে সিপিএম-কংগ্রেস: মমতা
যোগেন্দ্রর এই আর্জির উত্তরে মমতা বলেন, ‘যোগেন্দ্রভাইদের বলব, আমার দিক থেকে কোনও আপত্তি নেই। আমি অল আউট খেলা খেলব। অল আউট জিতব। খেলা হবে, খেলতেও হবে, জিততেও হবে। সব রাজ্য যদি এ ভাবে এগিয়ে যায়, সব গণ-সংগঠন যদি এগিয়ে যায়, সব আঞ্চলিক দল যদি এগিয়ে যায়, সব জাতীয় দল যদি এগিয়ে যায়… আমি বিশ্বাস করি, বিজেপি যদি ভাবে চিরকাল থাকবে, চিরকাল কেউ থাকে না। ওরা অনেক অত্যাচার করেছে। আর-না, আর-না, বিজেপি আর-না।’

জাতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলি সমমনোভাব নিয়ে এগোলে বিজেপি চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে না বলে মমতা মনে করলেও কংগ্রেসের ভূমিকায় যে তিনি সন্তুষ্ট নন, সেটা স্পষ্ট করেছেন। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের ‘অহঙ্কারী’ মনোভাবের কারণে লোকসভা নির্বাচনে রাহুল-ব্রিগেড কতদূর সাফল্য পাবে, তা নিয়ে শুক্রবারই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন মমতা।

আসন্ন লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ৪০টি আসন পাবে কি না, মমতা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করায় শনিবার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘উনি কংগ্রেসকে নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। লোকসভা নির্বাচনে কে কত আসনে জয়ী হবে, তা নিয়ে কারা ওঁকে পরামর্শ দিচ্ছেন জানি না। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মমতা যে সংখ্যা বলেছেন, তা ভুল বলেই প্রমাণিত হবে। আমার ধারণা, উনি এখনও ইন্ডিয়া জোটেই রয়েছেন।’

Mamata Banerjee : রেড রোডে মর্নিং ওয়াক মমতার, নাড়াচাড়া বাস্কেট বল নিয়েও
শুক্রবার রেড রোডে ধর্নামঞ্চে নাম না-করে রাহুলকে খোঁচা দেন মমতা। যার প্রেক্ষিতে বহরমপুরে অধীর চৌধুরী শনিবার বলেন, ‘কিছু দিন আগেই উনি রাহুলের সঙ্গে পাটনা, বেঙ্গালুরুতে বৈঠক করলেন। তখন রাহুলকে বললেন, আমার লিডার। সেই রাহুলকে নিয়ে উনি এখন বলছেন, কোথায় কী খায় কে জানে! আমাদের স্টকে অনেক কিছু আছে, কিন্তু আমরা এখনই তা বলতে চাই না।’

অধীর তাঁর ‘স্টক’ স্পষ্ট না করলেও রেড রোডের মঞ্চ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেসকে তুলোধনা করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরকে ‘বিজেপির এজেন্ট’, ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘বিজেপির দালাল’ বলে চিহ্নিত করেছেন তৃণমূলের লোকসভার সচেতক। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্কের এমন পরিস্থিতিতে মল্লিকার্জুন খাড়গেরা জোড়াফুলকে অসম, মেঘালয়ে আসন ছাড়তে রাজি। কিন্তু মমতা এই প্রস্তাবে সায় দেবেন কি না, সেটা স্পষ্ট নয়। কারণ অসম, মেঘালয়ে কংগ্রেস তৃণমূলকে আসন ছাড়ার বদলে পশ্চিমবঙ্গে দু’টির বেশি আসন চায়। কংগ্রেসের এই সমঝোতা-সূত্রে মমতা কতটা রাজি হবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কংগ্রেসেই।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *