সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, ‘আজকে আবার একটি নিস্ফলা দিন গেল। তবে সুপ্রিম কোর্টের একটি নিয়ম আছে, যেটায় লিস্টেড যে মামলা আজকে উঠলো না, সেটা আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে উঠবে। ফলে এটিকে বেশিদিন পিছিয়ে রাখা যাবে না। আমরা হাল ছাড়ছি না।’ তবে, ডিএ নিয়ে আন্দোলন চলতে থাকবে। তাঁর বক্তব্য, ‘আগামী ১০ তারিখ রাজ্য কমিটির মিটিং ডাকা হচ্ছে। সেই বৈঠকে আমরা আমাদের আগামী দিনের আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করব।’
দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তাঁরা। তৈরি করা হয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তাঁদের দাবি, একমাত্র এই রাজ্যে এত কম পরিমাণ ডিএ দেওয়া হয়। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে তুলনা করলে এই রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা অনেকটাই কম ডিএ পান। সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও মেলেনি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ।
কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার বিষয়ে এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। হাইকোর্টে এই মামলাটি জেতে তাঁরা। ২০২২ সালের ২০ মে রাজ্য সরকারকে ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। এর মাঝেই গত ২১ ডিসেম্বর ৪ শতাংশ হারে ডিএ বাড়ানোর কথা জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার জানিয়েছেন, একবারে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একই হারে ডিএ বৃদ্ধি রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয়। অন্যদিকে, রাজ্যের একাধিক বিরোধী দল ডিএ আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন। রাজ্যের একাধিক বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বে হাজির হন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সভাতেও।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের হয়ে এই মামলাটি লড়ছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। রাজ্যের যুক্তি, কেন্দ্রীয় হারে সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে গেলে এই মুহূর্তে রাজ্যের খরচ হবে প্রায় ৪১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যে টাকা রাজ্যের তহবিল থেকে খরচ করা সম্ভব নয়। এছাড়া মহার্ঘ্য ভাতা সরকারি কর্মচারীদের দেওয়াটা বাধ্যতামূলক নয় বলেও যুক্তি ছিল রাজ্যের।