চুঁচুড়া হাসপাতালের স্টাফ নার্স বন্দনা দত্তগুপ্তের দুটি বদলির অর্ডার দেওয়া হয় সোমবার। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁকে বদলি করা হয় চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। আবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে একটি নোটিশ দিয়ে জানানো হয়েছে, তাঁকে বদলি করা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের অনুপনগর গ্রামীণ হাসপাতালে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও ওই নার্সের বিরুদ্ধে রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে হাসপাতালে এসে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার।
পালটা, বিধায়ক তাঁর দলবল নিয়ে এসে হাসপাতালে এসে হম্বিতম্বি করেন বলে নার্সদের তরফে অভিযোগ তোলা হয়। এমনকি, অভিযুক্ত নার্সকে অপমান করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। এরই প্রতিবাদে চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালের নার্সিং স্টাফরা কালো ব্যাজ পরে হাতে প্লাকার্ড নিয়ে সুপারের ঘরে বিক্ষোভে সামিল হন সোমবার। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই এই বদলির অর্ডার আসে।
গত ২ রা ফেব্রুয়ারি রাতে হাসপাতালেরর ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্স বন্দনা দত্তগুপ্ত বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাঁকে অপমান করা হয় বলে অভিযোগ। এদিন সুপারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন নার্সরা। নার্সেস ইউনিটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বিধায়কে ক্ষমা চাইতে হবে, নার্সের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। হাসপাতাল থেকে আয়া সরাতে হবে। রোগী নার্সের অনুপাত ঠিক করতে হবে। না হলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে।
নার্সেস ইউনিটের স্টেট সেক্রেটার ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা সরকারি হাসপাতাল , এটা এখনও জঙ্গলের রাজত্ব হয়ে যায়নি। কেউ কেউ চাইছেন এটা জঙ্গলের রাজত্ব করার। কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে গেলে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হয়।’ তাঁর কথায়, এখন প্রতিটা নার্স নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। দলবল নিয়ে একটা ফিমেল ওয়ার্ডে ঢোকা যায়? বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানান, তিনি এই দাবি সিএমওএইচ-এর কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এবিষয়ে বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘ওই দিনের ঘটনার প্রমাণ স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হবে বলেছেন সুপার ও সিএমওএইচ। ওঁরা আন্দোলন করতেই পারেন, আমি সাধারণ মানুষের জন্য গিয়েছি। আমার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন নেই।’ এই ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘এর আগেও নার্সদের উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য বিধায়ক করেছে। বিধায়ক একটা হাসপাতালের মহিলা বিভাগে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ঢুকে তাণ্ডব করেছে এর ধিক্কার জানাই। ওঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’