North Bengal Medical College and Hospital: ল্যারিঙ্গস থেকে জোঁক বের করে দিনমজুরের প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসকরা – north bengal medical college and hospital doctors save a labourer life by removing leeches from larynx


এই সময়: খেতে কাজ করতে গিয়ে তেষ্টা পেয়েছিল। ঝরনার জল খেয়েছিলেন। বছর চল্লিশের ওই মহিলা দিনমজুর বোঝেননি যে অজান্তেই জোঁক গিলে ফেলেছেন। সেই জোঁক পরে আটকে যায় খাদ্যনালী ও শ্বাসনালীর সংযোগস্থল ল্যারিঙ্গসে। এমনটা যে হয়েছে, সেটা জানতেই না ওই মহিলা। তাই সে জোঁকের মুখে নুন দেওয়াও যায়নি!

জোঁক ল্যারিঙ্গসে আটকে বসে যাওয়ার ফলে প্রথমে খাবার গেলা ও কাশতে গিয়ে এবং পরে শ্বাসপ্রশ্বাসে প্রবল সমস্যা হচ্ছিল মহিলার। বিরল এই ঘটনায় অবশেষে ল্যারিঙ্গোস্কোপির সাহায্য জটিল অপারেশন করে রোগিণীর প্রাণ বাঁচালেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা।

দিন তিনেক প্রবল সমস্যা সহ্য করার পর কালিম্পং জেলার গোরুবাথানের বাসিন্দা ওই মহিলা গত শুক্রবার বিকেলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আসেন। সেখানকার ইএনটি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক রাধেশ্যাম মাহাতো বলেন, ‘রোগিণীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিন পনেরো আগে তিনি একদিন ঝরনা জল খেয়েছিলেন। সেখান থেকেই কিছু গলায় আটকেছে বুঝতে পেরে তাঁকে ওই দিন সন্ধ্যাতেই ইমার্জেন্সি অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্যামেরা লাগানো ফাইবার-অপটিক ল্যারিঙ্গোস্কোপিতে দেখা যায়, অন্তত চার সেন্টিমিটার লম্বা একটি জোঁক আটকে রয়েছে ল্যারিঙ্গসে। সেটি ক্রমাগত নড়াচড়াও করছে।’

এর পর আর কালক্ষেপ করা হয়নি। জোঁকটি পিছলে যাতে শ্বাসনালী দিয়ে ফুসফুসে চলে গিয়ে আরও বড় বিপত্তি ঘটাতে না পারে, সে জন্য গলার নীচের দিকে ফুটো করে ট্র্যাকিয়োস্টোমি করা হয়। এতে শ্বাসনালীর উপরের দিক ব্লক করে সরাসরি ফুসফুসে অক্সিজেন পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হয়। তার পর ল্যারিঙ্গোস্কোপের সাহায্যেই জোঁকটিকে টেনে বের করা হয় গলা থেকে।

চিকিৎসায় গাফিলতিতে ক্ষতিপূরণ ২৫ লাখ, নির্দেশ ক্রেতাসুরক্ষা আদালতের
রাধেশ্যামের নেতৃত্বে সার্জারি টিমে ছিলে ইএনটি সার্জেন গৌতম দাস, সৌমেন্দ্র ভৌমিক, তুহিন শাসমল, আজ়হার উদ্দিন, অজিতাভ সরকার ও সন্দীপ মণ্ডল। অ্যানাস্থেশিয়া টিমে ছিলেন ধর্ম রাজা, নিশা ভুটিয়া, সৌরভ কর্মকার, দিয়া মিত্র ও পার্সি মান্ডি। ছিলেন ওটি-র নার্স শবনম শর্মা, দীপিকা বর্মন ও শেখ আজহারউদ্দিন এবং ওটি টেকনিশিয়ানরা।

রবিবার রাধেশ্যাম বলেন, ‘জোঁকটি বের করার পরই শারীরিক অবস্থার লক্ষ্যণীয় উন্নতি হয় ওই মহিলার। এখন তিনি ভালো আছেন।’ তিনি জানান, তাঁর দীর্ঘ আড়াই দশকের ইএনটি সার্জেন কেরিয়ারে এমন ঘটনা এই নিয়ে দ্বিতীয়। এমন ক্ষেত্রে জোঁকটিকে বের করতে দেরি হলে কিংবা সেটি পিছলে ফুসফুসে চলে গেলে প্রাণঘাতী অবস্থা এড়ানো মুশকিল হতো।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *