Life Imprisonment,ছ’ঘণ্টার প্যারোলে বাড়িতে মনুয়া, মেয়ের পাতে প্রিয় মাছ – manua majumdar came to house in barasat for six hours parole who was sentenced to life imprisonment


সময়, বারাসত: কয়েক বছর ধরেই ভুগছেন রুমা মজুমদার। এখন তো কার্যত শয্যাশায়ীই। বর্ধমান সংশোধনাগারে বসে সে খবর কানে যায় হৃদয়পুরের অনুপম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মনুয়া মজুমদারের। অসুস্থ মাকে বাড়ি গিয়ে দেখে আসার জন্য আদালতে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিল মনুয়া। আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর এই প্রথম ছ’ঘন্টার প্যারোলে সোমবার বারাসত নবপল্লির ষষ্ঠীপুকুরের বাড়িতে আসে মনুয়া। মায়ের শরীরের খুঁটিয়ে খোঁজখবর নেয়। তারপর বাকি সময়টা মা-বাবার সঙ্গে কাটিয়ে রাতেই ফিরে গিয়েছে বর্ধমান সংশোধনাগারে।সোমবার দুপুর দেড়টায় বর্ধমান থেকে আট জন পুলিশকর্মীর প্রহরায় বারাসত থানায় আসে মনুয়া। এরপর পুলিশের প্রিজ়ন ভ্যানে করেই বেলা আড়াইটে নাগাদ বারাসতের বাড়িতে। সংবাদমাধ্যমকে দেখেই মুখ সাদা ওড়নায় ঢেকে নেয়। মেয়ের জন্য গেটের সামনে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন বাবা নির্মল মজুমদার এবং এক আত্মীয়া। মেয়ে আসতেই হাত বাড়িয়ে দেন নির্মল। মেয়েক নিয়ে ঢুকে যান ঘরে।বিছানায় শুয়েছিলেন মনুয়ার মা রুমা। মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে মনুয়া। প্রশ্ন করে, কেমন আছ? সাত বছর পর মেয়েকে কাছে পেয়ে তখন দু’চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে রুমার। এ দিন মেয়ে আসবে বলে সকাল সকাল বাজারে গিয়েছিলেন নির্মল। মেয়ের পছন্দের কাতলা মাছ কিনে এনেছিলেন। ছিমছাম মেনুতে সবই ছিল মনুয়ার পছন্দের— ভাত, ডাল, আলুভাজা এবং কাতলা মাছ। শেষপাতে মিষ্টি। মা-বাবাকে নিয়ে দুপুরে একসঙ্গেই খেয়েছে মনুয়া।ওদিকে মনুয়া আসছে খবর পেয়ে বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকেই। দু-একজন পড়শি ঘরে ঢুকতে চাইলেও পুলিশ আটকে দেয়। মনুয়া যতক্ষণ ছিলেন বাড়ির দুটো গেটেই তালা লাগিয়ে রেখেছিল পুলিশ। বেরিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই নানা প্রশ্ন করেন মনুয়াকে। মনুয়া কোনও কথা না বলেই প্রিজ়ন ভ্যানে উঠে যায়। মেয়ে চলে যাওয়া পর সংবাদমাধ্যমকে নির্মল মজুমদার বলেন, ‘ওর মা খুব অসুস্থ। মাকে দেখতেই এসেছিল। খুব ভালো লেগেছে মেয়েকে কাছে পেয়ে। ওর পছন্দের কাতলা মাছ করেছিলাম। বাড়ির সব খাবার মনুয়া তৃপ্তি করেই খেয়েছে।’প্রতিবেশী অশোক মজুমদার বলেন, ‘অসুস্থ মাকে দেখতে প্যারোলে আসতেই পারে। কিন্তু নৃশংস ভাবে যে স্বামীকে খুন করিয়েছিল, তাকে সাজা তো পেতেই হবে।’ উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে মনুয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল অনুপম সিংহের। পরে মনুয়া অজিত রায়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। অনুপম বিষয়টি জানতে পারলে দাম্পত্য কলহের সূত্রপাত হয়। ২০১৭ সালের ২ মে প্রেমিক অজিতের সঙ্গে যোগসাজশে স্বামীকে খুন করায় মনুয়া। খুনের সময় প্রেমিকের মোবাইল চালু রেখে বাপের বাড়িতে বসে স্বামীর শেষ আর্তনাদ শোনে। ঘটনার ১৪ দিন পর অনুপম হত্যা তদন্তে মনুয়া এবং তার প্রেমিক অজিতকে গ্রেপ্তার করে বারাসত থানা। দু’বছর পর ২০১৯ সালে অনুপম হত্যা মামলায় মনুয়া মজুমদার এবং তার প্রেমিক অজিত রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে আদালত।দমদম সেন্ট্রাল জেলেই ছিল মনুয়া। কয়েকমাস আগে তাকে বর্ধমান সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন সেখান থেকে প্যারোলে বাড়ি এসেছিল মনুয়া।

ঋতবান মুখোপাধ্যায় এর বিষয়ে

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *