Madhyamik Exam : সাপের কামড়! তবুও ইতিহাস পরীক্ষা দিল লক্ষ্যে অনড় অর্জুন – madhyamik student arjun majhi sat on history exam in hospital after bitten by a snake at burdwan


এই সময়, বর্ধমান: কিছুতেই শেষ হতে চায় না ইতিহাসের সিলেবাস। তাই রবিবার রাত জেগেই রিভাইস দিচ্ছিল ভাতারের বালসিডাঙার বাসিন্দা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন মাঝি। কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতে পারেনি। আচমকা বাঁ পায়ে ভীষণ জ্বালা হতে ঘুম ভেঙে যায় তার। বিষয়টি জানালে রবিবার রাতেই তাকে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন।

জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক পায়ে কামড়ের দাগ দেখে বুঝতে পারেন সাপে কামড়েছে ভাতার হাইস্কুলের ছাত্র অর্জুনকে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করে দেন তিনি। সকাল হতেই অর্জুন জানায় যে পরীক্ষা দিতে চায়। সাপের কামড় নিয়ে অবশেষে সে এদিন পরীক্ষা দিয়েছে হাসপাতালে বসেই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে হাসপাতালের চিকিৎসকরা অর্জুনকে পরীক্ষা করে দেখেন। তবে তাঁরা ছুটি দিতে রাজি হননি। এর পরেই ভাতার হাইস্কুলের পক্ষ থেকে বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে জানানো হয়। তার পরেই হাসপাতালে বসে যাতে অর্জুন পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়।

অর্জুনের বাবা উৎপল মাঝি বলেন, ‘সাপে কামড়ানোর পরে যে কোনও মানুষই একটু নার্ভাস হয়ে পড়ে। আমরাও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ছেলে একেবারেই ভয় পায়নি। খালি বলতে থাকে আমি পরীক্ষা দেবো, তার ব্যবস্থা কর। সকালে স্যারদের কাছে গিয়ে বলার পরে হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিয়েছে ছেলে।’

অর্জুনের সিট পড়েছিল বড়বেলুন হাইস্কুলে। হাসপাতালে অর্জুনের পরীক্ষার গার্ডে ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘সাপে কামড়েছে জেনেই মানুষ অর্ধেক মারা যায়। মনের জোর নিয়ে এতটুকু একটা ছেলে সাপের কামড়ের পড়েও পরীক্ষা দেওয়ার কথা বলেছে এটাই অনেক। এমন মনের জোর ক’জন দেখাতে পারে!’

আর পরীক্ষা শেষে অর্জুন বলে,‘জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। আমি দিতে না-পারলে অন্য বন্ধুরা এগিয়ে যেত। আর ইতিহাস আমার প্রিয় বিষয়। পরীক্ষাও ভালো হয়েছে।’ পর্ষদের জেলার কনভেনার অমিতকুমার ঘোষ বলেন, ‘মানসিক জোর না-থাকলে সাপে কামড়ানোর পড়েও কেউ এ ভাবে পরীক্ষা দিতে পারে না। ওর জন্য আমাদের শুভেচ্ছা রইল।’

Hooghly News Today : মাধ্যমিকের গার্ড দেওয়ার সময় যন্ত্রণায় কাতর অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকা, শুরু রক্তক্ষরণও! ভর্তি হাসপাতালে
দীর্ঘদিন ধরে সাপ উদ্ধারের কাজের সঙ্গে জড়িত বর্ধমান শহরের বাসিন্দা অর্ণব দাস। বিভিন্ন জায়গা থেকে সাপ ধরে সেগুলি বনে-জঙ্গলে ছেড়ে দেন তিনি। এদিনের ঘটনার প্রসঙ্গে অর্ণব বলেন, ‘অর্জুনের মতো ছেলেরাই আমাদের প্রচারের বড় হাতিয়ার হতে পারে। আমরা সবসময় বলি সাপে কামড়ালে কোনও ওঝা, গুণিন নয়, সোজা হাসপাতালে যেতে হবে। মনের জোর হারাবেন না। ওটাই তখন অ্যান্টিভেনামের কাজ করে। অর্জুনের সুস্থ হওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল আর ওর পরীক্ষা শেষে আমরা গিয়ে ওকে সংবর্ধনা দিয়ে আসব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *