Naihati Municipality: চার বছরের ছেলেকে মেরে আত্মঘাতী মা, প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিনেই লাশকাটা ঘরে – naihati police recovered woman and her son body from municipality area


এই সময়, নৈহাটি: চার বছরের খুদের প্রথম স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল সোমবার। সেই মতো কেনা হয়ে গিয়েছিল স্কুল ড্রেস। কিন্তু স্কুলের বদলে নৈহাটির ছোট্ট শিশুর ঠাঁই হলো ব্যারাকপুর হাসপাতালের মর্গে। একই সঙ্গে রাখা হয়েছে তার মায়ের দেহও। আজ মা-ছেলের দেহের ময়নাতদন্ত হবে।

রবিবার রাতে নৈহাটি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দ পল্লির একটি বাড়ি থেকে মা-ছেলের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক অশান্তির জেরে ছেলের গলায় ফাঁস লাগিয়ে দড়ির সঙ্গে ঝুলিয়ে নিজের গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন মা। মৃত মায়ের নাম প্রিয়াঙ্কা অধিকারী (২৮), ছেলে সৌমিক অধিকারী (৪)। প্রিয়াঙ্কার স্বামী, পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শুভঙ্কর অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রাতেই নৈহাটি থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় প্রতিদিনই মদ খেয়ে বাড়ি ঢুকতেন শুভঙ্কর। যা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত। শুভঙ্কর স্ত্রীকে মারধরও করতেন বলে অভিযোগ। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হাজারো বারণেও শুভঙ্কর নিজেকে বদলাননি। রবিবার সন্ধেয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি বাধে। কিছু পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শুভঙ্কর। কিছু পরে তাঁর এক সহকর্মী বাড়ি থেকে সাইকেলের চাবি নিতে আসেন।

শুভঙ্করের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কার নাম ধরে ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পাননি তিনি। শেষে পাশের ঘর থেকে শুভঙ্করের জেঠিমা অনিতা অধিকারী বৌমাকে ডাকতে প্রিয়াঙ্কার ঘরে ঢোকেন। ঘরে ঢুকেই তাঁর চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। দেখেন সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে নাতি সৌমিকের দেহ। একই ঘরের খাটের ছত্রিতে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। সৌমিকের দেহ ঝুললেও, ছত্রি ভেঙে প্রিয়াঙ্কা মাটিতে পড়ে রয়েছেন।

স্বামীর কীর্তি! স্রেফ সন্দেহের বশে স্ত্রীকে ১২ বছর ‘ঘরবন্দি’
অনিতার চিৎকার-চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন পরিবারের বাকিরা। চলে আসেন পড়শিরাও। তড়িঘড়ি মা-ছেলেকে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে বাড়ি আসেন শুভঙ্কর। নৈহাটি থানার পুলিশও ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুভঙ্করকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

শুভঙ্করের জেঠিমা অনিতা অধিকারী বলেন, ‘ভাইপো রোজ মদ খেয়ে বৌয়ের উপর অত্যাচার করত। আমরা বহুবার ওকে বুঝিয়েছি। কিন্তু কথা শোনেনি। আমার ছেলে দেবাশিসও ওকে বোঝাত। যতবার ওকে আমরা বলতাম, ততবারই ও ভালো হয়ে যাবে বলত। কিছুই হলো না। শেষে ওর বৌ তো মরলই, সঙ্গে আদরের ছোট্ট নাতিটাকেও মেরে দিল।’ শুভঙ্করের জেঠু দীপক অধিকারী বলেন, ‘সৌমিককে শনিবারই স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল। ওর স্কুল ইউনিফর্মও আনা হয়ে গিয়েছিল। স্কুলে যাওয়ার আনন্দে ও উৎফুল্ল ছিল। কিন্তু কী ভাবে যে কী হয়ে গেলে বুঝতে পারছি না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *