Medinipur Incident,কন্যা সন্তান বিক্রি: শিশুদের পাঠানো হলো হোমে, কাউন্সেলিং দম্পতির – administration take initiative to arrange voter ration card and lakshmi bhandar who allegedly sold her child in medinipur


এই সময়, মেদিনীপুর: ‘এই সময়’-এর খবরের জেরে অবশেষে টনক নড়ল প্রশাসনের। অভাবের কারণে শিশু বিক্রির ঘটনায় ওই দম্পতির ১০ সন্তানের মধ্যে হোমে ঠাঁই হলো ৫ জনের। তিন জন আপাতত দম্পতির কাছেই থাকবে। মহিলার প্রথম পুত্রসন্তানের বয়স ১৮ বছর। মাস চারেক আগে ১৬ বছর বয়সী দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের বিয়ে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশে।

বাকিদের নিয়ে হিমশিম দশা হয়েছিল তাঁর। মহিলার ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে প্রশাসন। মঙ্গলবার প্রশাসনের উদ্যোগে দম্পতির ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের কাউন্সেলিং করা হয় জেলা কালেক্টরেট ক্যাম্পাসে। তারপর তিন শিশুসন্তান-সহ দম্পতিকে পাঠানো হয় মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়ায় মহিলার মায়ের বাড়িতে।

গত রবিবার ‘এই সময়’ সংবাদপত্রে রাজ্যের পাতায় শিশুবিক্রির খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপকুমার দাস বলেন, ‘হাতবদল হওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে আগেই বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনের ‘শা’ হোমে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ওদের আরও চার সন্তানকে কেশিয়াড়ি এবং পিংলার দু’টি কটেজ হোমে পাঠানো হয়েছে। দম্পতি বাকি তিন সন্তানকে নিয়ে তাঁতিগেড়িয়া এলাকায় থাকবেন শিশু সুরক্ষা দপ্তর ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের নজরদারিতে।’

অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ বিভাগ) কেম্পা হোন্নাইয়া বলেন, ‘শিশুগুলির ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, তাঁর জন্য ওই দম্পতির পাঁচ শিশুকে কটেজ হোমে পাঠানো হয়েছে। মহিলা যাতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড পান, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী মাস থেকেই তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবেন বলে আশা করা যায়। পরিবারটির প্রাথমিক কাউন্সেলিংও করা হয়েছে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিএমওএইচ–কে বলা হয়েছে, অন্বেষা ক্লিনিকের মাধ্যমে মহিলার কাউন্সেলিং করে লাইগেশন করানোর জন্য। প্রশাসনিক ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, সব রকম ভাবে সাহায্য করা জন্য। ভুল পথে না পরিচালিত হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।’

মেদিনীপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিগেড়িয়া এলাকার ৩৪ বছরের এক মহিলা ১০ সন্তানের মা! প্রতিবেশী ও স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা বার বারবার বুঝিয়েও, লাইগেশোন করাতে পারেনি। পাড়া থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে দশম সন্তান প্রসবের মাসদুয়েক আগে ওই এলাকা থেকে কিছুটা দূরে ফুলপাহাড়ি এলাকায় গিয়ে একটি ছোট বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে পরিবারটি। গত ১৭ জানুয়ারি ফের একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন মহিলা।

অভাবের কারণে মানুষ করতে পারবে না ভেবে, তিনি সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে দম্পতির বিরুদ্ধে। যদিও দম্পতির দাবি, বিক্রি নয়। ভালোভাবে মানুষ করার জন্য পরিচিত এক দাদাকে কন্যাসন্তান দিয়ে দেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমে এই খবর জানার পর হাতবদল হওয়া শিশুর খোঁজে ঝাঁপিয়ে পড়েন জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শালবনির গোদামোলী এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। ওই দিন শিশুটির স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর তাকে ‘শা’ হোমে পাঠানো হয়।

Medinipur Incident: দম্পতিকে জেরা, নাবালক ৮ সন্তানকে পাঠানো হবে হোমে
এই ঘটনার পর সোমবার রাতে ভাড়াবাড়ির মালিক এই দম্পতিকে রাতেই ঘর খালি করতে বলেন বলে অভিযোগ। রাতেই বের করে দেওয়া হয় সাত সন্তান সমেত দম্পতিকে। শীতের রাতে একটি আশ্রমের কাছে রাত কাটান তাঁরা। এরপর মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা গোটা পরিবারকে জেলা কালেক্টরেটে তুলে নিয়ে এসে, ৪ শিশুকে হোমে এবং বাকি ৩ শিশু-সহ দম্পতিকে তাঁতিগেড়িয়ার বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। মহিলা বলেন, ‘আমি একটা ভুল কাজ করে ফেলেছিলাম। তাঁর জন্য এত কাণ্ড। আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আমি ক্ষমা চাইছি। অফিসের বাবুরা আমার সব কিছু ব্যবস্থা করে দিলেন। আমি কথা দিচ্ছি, এবার অপারেশন (লাইগেশন) করাব। আর ভুল করব না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *