এমনকী, বহু গরিবকে বিনা পয়সাতে চিকিৎসা পরিষেবা দিতেন তিনি। ফলে একটা সময় তিনি কাঁথির মানুষের কাছে ‘এক টাকার ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কাঁথি শহরে প্রখ্যাত চিকিৎসক অজিত সিংহের কাছেই প্রথমে সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন মলয় সাহু। পরে নিজের বাড়িতেই ‘দুঃস্থ সেবাসদন’ নামে সেবা কেন্দ্র খোলেন।
দীর্ঘদিন কাঁথিবাসীকে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছেন তিনি। দিনে-রাতে যে কোনও সময়ই ‘চিকিৎসক’ মলয় সাহুকে পেতেন কাঁথিবাসী। কাঁটা-ছেঁড়া থেকে শুরু করে স্যালাইন-অক্সিজেন দেওয়া-শ্বাসকষ্টের সময় পাওয়া যেত মলয়বাবুকে। গরিবদের থেকে বিশেষ টাকাও নিতেন না তিনি।
তাঁর প্রয়াণে কাঁথিতে শোকের ছায়া। শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কাঁথি শহরের উদয়ন রোডের বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। রবিবার কাঁথির খড়গচণ্ডী মহাশ্মশানে মলয়বাবুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এইদিকে চিকিৎসকের প্রয়াণের খবর শুনে অনেকেই ছুটে আসে তাঁর আদিবাড়ী কাঁথি-৩ ব্লকের কানাইদিঘি গ্রামে। মলয়বাবুর ছেলে বলেন, ‘বাবার বয়স হয়েছিল। অনেক দিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। হঠাৎ করেই তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, সেই সব চেষ্টা বিফল করে প্রয়াত হন তিনি।’
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রে একজন প্রতিষ্ঠান। সকলের জন্য তাঁর দরজা খোলা থাকত। ডাক্তার দেখানো আজকাল খুব অসুবিধাজনক। সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে মলয় সাহু সকলের কাছে উদাহরণ। তিনি নিজেও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু, তিনি যে রয়েছেন সেটাই কাঁথির বাসিন্দাদের কাছে অনেক বড় বিষয় ছিল। তাঁর মৃত্যুটা এলাকাবাসীর জন্য বিরাট ক্ষতি।’ চোখের জলে ডাক্তারবাবুর শেষকৃত্যে যোগদান করেছিলেন অনেকেই।