Saraswati Puja 2024 : জয় জয় দেবী… সাত কন্যা সরস্বতী বন্দনায় – jadavpur vidyapith seven students are responsible for saraswati puja in school


এই সময়: বছর দুয়েক আগে কলকাতার কলেজ ছাত্রী উষসী চক্রবর্তী তাঁর বাড়িতে সরস্বতী পুজো করে নজর কেড়েছিলেন। এক ধাপ এগিয়ে মহানগরের যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ছাত্রীরা এ বার স্কুলে সরস্বতী পুজো পাঠ করবে। সে জন্য তারা এক সপ্তাহ ধরে রীতিমতো প্রশিক্ষণও নিচ্ছে।

১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি স্কুলে সরস্বতী পুজোর দায়িত্ব বর্তেছে মোট সাত জন পড়ুয়ার উপর। তার মধ্যে দশম শ্রেণির তিন কন্যা রূপসা মুখোপাধ্যায়, সৃজা সাউ এবং সৃজা মণ্ডলরা সরস্বতী ঠাকুরের মূর্তি পুজো করবে। আর বৈদিক হোমযজ্ঞ সামলাবে নবম শ্রেণির চার কন্যে কঙ্কণা পাল, সুকন্যা মণ্ডল, অঙ্কিতা বৈদ্য এবং সম্পূর্ণা দাস। আর তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে স্কুলেরই দুই প্রাক্তনী।

দীপ্তদীপ ঘোষ ও সৌম্যদীপ সাহা। তাঁরা এখন অবশ্য কলেজ পড়ুয়া। মেয়েদের দিয়ে স্কুলের পুজোর মাধ্যমে সামাজিক ‘ট্যাবু’ ভাঙার কারিগর হলেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য।

দীর্ঘদিনের এই বিশ্বাস ভাঙার কথা কী ভাবে মাথায় এল?

পার্থপ্রতিম বলেন, ‘দিন দশেক আগে আমার ঘরে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে বৈঠক চলছিল। সে সময়ই প্রয়োজনীয় নথিপত্র সই করতে এসেছিল দীপ্তদীপ। শিক্ষিকাদের কয়েকজন তখন জানায়, দীপ্ত নিজের বাড়ির পাশাপাশি অন্য বাড়িতেও পুজো করে। তখন আমিই ওকে এ বার স্কুলে সরস্বতী পুজোর প্রস্তাব দিই। কিন্তু ও বলে স্কুলের বাচ্চাদের দিয়ে পুজো করাতে। ওরা তাদের প্রশিক্ষণ দেবে। আমরা পত্রপাঠ সেই প্রস্তাব মেনে নিই।’

আশুতোষ কলেজের ভূগোল প্রথম বর্ষের ছাত্র দীপ্ত জানান, পঞ্চম শ্রেণি থেকেই পুজোপাঠে তাঁর হাতেখড়ি। সেই অভিজ্ঞতার নিরিখে স্কুলের সাত ছাত্রীকে শাস্ত্র মতে পুজো ও বৈদিক হোমের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। দাদাদের কাছে পুজো পাঠ নেওয়া রূপসার কথায়, ‘আমরা সরস্বতী পুজো করতে পারব বলে খুব এক্সাইটেড। অন্য বন্ধুরাও আমাদের পাশে আছে। বড় টিফিনের পর পুজোর প্রশিক্ষণের জন্য আর ক্লাস করতে পারছি না বলে, ওরা আড়াই-তিনঘণ্টা ধরে ক্লাসে কী পড়াশোনা হচ্ছে, তার সবকিছু আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে। এমনকী খাতা দিয়েও সাহায্য করছে।’

বৈদিক হোম করার কথা সুকন্যা মণ্ডলের। গরফা পূর্বাচলের বাসিন্দা সত্যজিৎ মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা। সে বলে, ‘মহিলারা পুরোহিত হয়ে কোথাও গিয়ে পুজো করতে পারে, সেটা আমার ধারণাই ছিল না।’ সত্যজিতের বাড়িতে তিন পুরুষের তারা মায়ের মন্দির আছে। শুক্রবার অমাবস্যার ভরসন্ধ্যায় তিনি পুজোর জোগাড়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘মেয়েকে আস্তে আস্তে এ বার বাড়ির মন্দিরের পুজো-অর্চনায় দায়িত্ব বুঝিয়ে দেব।’

যদিও বরানগরের শ্রী সীতারাম বৈদিক মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্মৃতিশাস্ত্রর পণ্ডিত বিদ্যুৎবরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সনাতন শাস্ত্রে বলা আছে, উপবিদধারী ব্রাহ্মণরাই অন্যের পুজো করতে পারে। আর যে কোনও দীক্ষিত ব্যক্তিই নিজ বাড়ির ইষ্টদেবতার পুজো করতে পারেন।’ যদিও পার্থপ্রতিম জানান, এখন নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্ব ও জোর দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া জাতপাতের বাঁধন ভেঙে মহিলারা এখন দুর্গাপুজো ও বিয়ের কাজও করছেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *