Sandeshkhali News : শেখ শাহজাহানের জোড়া সাগরেদ! ‘সন্দেশখালির ত্রাস’ কে এই উত্তম-শিবু? – sandeshkhali tmc leader shibaprasad hazra and uttam sardar allegedly attached in various offenses


গোটা সন্দেশখালি জুড়ে গ্রামবাসীদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে দুই নেতা। দাঁতে দাঁত চেপে সকলের একটাই দাবি, যেনতেন প্রকারেন এই দুই ‘ভিলেন’-এর গ্রেফতারি চাই! তাদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আন্দোলন থামছে না। কেউ বলছেন, তাঁরাই জুনিয়র বাদশা,‌ কেউ আবার বলছেন সন্দেশখালিতে যত কাণ্ড এই দুজনের জন্যেই। গ্রামবাসীদের জোর করে খাটিয়ে পাওনা না মেটানো,‌‌ জমি দখল, মহিলাদের অত্যাচার কিছুই বাদ নেই এই দুই নেতার ক্রাইম লিস্ট থেকে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শেখ শাহজাহানের ডান হাত যদি হয় উত্তম সর্দার, তবে অপর হাত শিবপ্রসাদ হাজরা। তাদের অত্যাচারের নানা কীর্তি গত কয়েকদিনে প্রকাশ্যে এসেছে। অত্যাচারের প্রতিবাদে স্থানীয় এই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হাজার হাজার গ্রামবাসীর

সন্দেশখালি ২ এর জেলা পরিষদের সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা ও তিনিই ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। অন্যদিকে, হাত উত্তমকে সন্দেশখালির ১ এর সভাপতির পদ দিয়ে সন্দেশখালিতে নিজের রাজত্ব কায়েম করেছিল শাহজাহান। উত্তম সর্দারের-এর উত্থান বসিরহাট কলেজের কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের হাত ধরে। সেই সময় ওই কলেজে কংগ্রেসের দুটি লবি ছিল। অসিত মজুমদারের এবং দিলীপ মজুমদারের। দিলীপ মজুমদারের গ্রুপে থাকাকালীন কংগ্রেসের ২ গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে বেধড়ক মার খেতে হয় উত্তমকে। এরপরই দিলীপ মজুমদারের হাত ছেড়ে অসিত মজুমদারের লবিতে ভেরে উত্তম সর্দার।

Sandeshkhali Incident : ফের উত্তপ্ত সন্দেশখালি! পোল্ট্রি ফার্মে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর

সেই সময় সন্দেশখলীতে কংগ্রেসের থেকে তৃণমূলে যোগদান করে, শেখ শাহজাহানের হয়ে মিটিং মিছিল নানা আয়োজনের ব্যবস্থা করে ‘কাছের মানুষ’ হয়ে ওঠে উত্তম। তৃণমূলের তরফ থেকে ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হয় উত্তমের হাতে। ব্লক সভাপতি হিসেবে উত্তম সর্দার এলাকার গুরুত্বপূর্ণ নেতাও হয়ে ওঠেন। তার ওপর ভরসা রেখেই দল জেলা পরিষদের টিকিটও দেয় উত্তমকে। বলতে গেলে একপ্রকার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেতে সে। ব্লকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ক্রমে উত্তমের অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে স্থানীয়দের ওপর।

স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করছেন, সেই সময়ে থেকেই এলাকার চাষের জমির উপর নজর পরে উত্তমের। পরবর্তীতে জেলা পরিষদের ক্ষমতা মেলায় কয়েক হাজার বিঘা চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে ভেড়ি তৈরি করে দখল করে সে এমনটাই অভিযোগ। কোনওরকম লিজের টাকা দেওয়া হয় না। টাকা বা জমি চাইতে গেলেই জোটে মারধর হুমকি সহ নানা অত্যাচার। এমনকি প্রয়োজনে বাড়িঘর ভাঙচুর করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার ওপর। কোন তৃণমূলের মিটিং মিছিল থাকলেই এলাকার স্থানীয় খেটে খাওয়া চাষি, শ্রমিক, মৎস্যজীবী সকল মানুষকেই কাজ বন্ধ রেখে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হত। নির্দেশ অমান্য করলেই শুরু হতো চরম অত্যাচার। যার আঁচ পৌঁছতো পরিবারের উপরও।

TMC News : সন্দেশখালি আন্দোলনের জের, সাসপেন্ড শেখ শাহজাহানের অনুগামী তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার
অন্যদিকে, শিবপ্রসাদ হাজরার আদি বাড়ি ছিল জেলিয়াখেলিতে। এক সময় সিপিএমের হাত ধরে উত্থান তার। সিপিএমের সুময়ের ঝান্ডা ধরা কর্মী থাকলেও, পালাবদলের পর তৃণমূলে যোগদান করে শেখ শাহজাহানের কাছের লোক হয়ে ওঠে ‘শিবু’। নেক নজরে থাকায় পঞ্চায়েতের টিকিট পায় সে। একবার পঞ্চায়েতের মেম্বারও হয়েছিলেন শিবু। তারপরেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতির পদ পায় সে। হাতে আসে জেলা পরিষদের টিকিট। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শিবপ্রসাদ হাজরা জয়ী হয়ে পদে বসেন। সেই থেকে এলাকার মানুষের ওপর অত্যাচার রাহাজানি শুরু করে শিবুও বলে দাবি স্থানীয়দের। মেছো ভেড়ি থেকে চাষের জমি সহ এলাকা পরিচালনার সমস্ত দায়িত্ব শেখ শাহজাহানের অঙ্গুলী হিলনেই করতেন শিবপ্রসাদ। ২০১৬ এর পর থেকেই শেখ শাহজাহানের সঙ্গেই উত্থান ঘটে এই দুই সাগরেদের। আজও বেতাজ বাদশা ছত্রছায়ায় দুই নটবর।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *