রবিবার রেড রোডে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চে প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা বর্তমানে দলের মুখপাত্র রাজীব বন্দ্যেপাধ্যায়কে ঘিরে হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ ‘গদ্দার হঠাও, বাংলা বাঁচাও’ স্লোগান দিতে থাকেন। এই ঘটনার জেরে ধরনা মঞ্চেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। এমনকী পরিস্থিত এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে শেষ পর্যন্ত হাওড়ার নেতাদের ধরনা মঞ্চ তথা ওই চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। রাজ্য সভাপতির চড়া সুর শুনে মিনিট দশেকের মধ্যেই হাওড়া সদর থেকে আগত নেতা-কর্মীরা ফিরতি পথ ধরেন। গোটা ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় ধরনা মঞ্চ চত্বরে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এই সময় ডিজিটালের পক্ষ থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে কাম্য নয়। আমাদের সভাপতি সুব্রত বক্সী যা বলার বলে দিয়েছেন। আমারও মনে হয় দলের একটা শৃঙ্খলা থাকা উচিত। সেই শৃঙ্খলাটা নেতৃত্বেরই উচিত বজায় রাখা। নেতৃত্বই যদি সেই শৃঙ্খলা বজায় না রখতে পারেন, কর্মীরা কী করবেন?’ কিন্তু রাজনৈতিকমহলের একাংশের প্রশ্ন উঠছে এই ধরণের স্লোগানের নেপথ্যে কে বা কারা, কিংবা কার অনুগামীরা রয়েছেন? রাজীবের জবাব, ‘বলতে চাই না, সকলেই জানেন। জেলা সদরের যিনি সভাপতি তাঁর (অনুগামীরা)। তার আগেই আমি যে মিছিল নিয়ে গিয়েছে, মানুষ দেখেছে, কী লোক নিয়ে আমি ঢুকেছি, এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’
নিশ্চিতভাবে কাম্য নয়। আমাদের সভাপতি সুব্রত বক্সী যা বলার বলে দিয়েছেন। আমারও মনে হয় দলের একটা শৃঙ্খলা থাকা উচিত। সেই শৃঙ্খলাটা নেতৃত্বেরই উচিত বজায় রাখা।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের কয়েক মাস পর অবশ্য ফের ঘাসফুল শিবিরে ফিরে আসেন তিনি। সেক্ষেত্রে ফিরে আসার এতদিন পরেও এই ধরণের স্লোগান শুনে কী মনে হয়? রাজীবের উত্তর, ‘সর্বোচ্চ নেতৃত্ব জানেন, আমি দলের মুখপাত্র। নেত্রী নিজে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন লোক নিয়ে আসার জন্য। এটা যাঁরা করছেন, তাঁরা বুঝতে পারছেন যে পায়ের তলার জমি হারাচ্ছেন। এটা ইচ্ছাকৃত করা হয়েছে। দলের নেত্রীকে জানিয়েছি। আমি দলের বিড়ম্বনায় পড়তে দিইনি বলেই আমার মতো করে বেরিয়ে এসেছি। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব জানেন বিষয়টা, দলের ওপরে আমার আস্থা আছে।’
যদিও এই বিষয়ে হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূলের সভাপতি কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘আমার কোনও অনুগামী নেই, তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ২০২১ সালের স্মৃতি ভুলতে পারেননি বলে এইসব করেছেন।’ তবে এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাওড়া জেলার রাজনীতিতে।