দিনহাটা চওড়াহাট বাজারে বাশের কুলা, চালুনের ব্যবসা করেন গোপাল দাস। সেখানেই একদিন ছোট্ট একটি মেয়েকে অসহায়ভাবে পড়ে থাকতে দেখেন গোপাল। মেয়েটিকে বাজার থেকে নিজের বাড়ি নিয়ে আসেন। একেবারে নিজের মেয়ের মত বড় করে তোলেন। সেই মেয়ে এখন ১৮ পেরিয়েছে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই বিয়ে চিন্তা মাথায় আসে গোপালের। পাত্র খোঁজা শুরু হয়।
এরপর তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের বলরামপুর গ্রামের উৎপল দাসের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় মেয়ের। ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। পাশাপাশি টোটোও চালায়। কিন্তু বিয়ে ঠিক হতেই খরচ নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা যায় গোপালের। কী করবেন, কোথা থেকে বিয়ের খরচ জোগাড় করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কার্যত রাতের ঘুম উড়ে যায় তাঁর। সেই সময় পাড়া প্রতিবেশী ও কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন গোপালকে। মন্ত্রী দায়িত্ব নিতেই জোরকদমে শুরু হয় বিয়ের তোড়জোড়। সোমবার মুক্তধারা ক্লাবে সানাইয়ের সুরে চারহাত এক হয় উৎপল ও লক্ষ্মীর।
বিয়েতে নিয়ন্ত্রিতের সংখ্যআ ছিল ২০০। অতিথিদের জন্য খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও করা হয়। এই প্রসঙ্গে ক্লাব সদস্য মনোজ দে বলেন, ‘মন্ত্রীর উদ্যোগে এই বিয়ে হচ্ছে। নিমন্ত্রিতের সংখ্যা ২০০।’ যদিও মন্ত্রী উদয়ন গুহ কলকাতায় থাকায় বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত তাকতে পারেননি। তবে নিজে হাজির না থাকতে পারলেও দিনভর বিয়ের সমস্ত খোঁজ খবর নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের দায়িত্ব। ওদের বিবাহিত জীবন সুখে কাটুক এই কামনা করি।’
এদিকে মন্ত্রীর এই ভূমিকায় সাধুবাদ দিচ্ছেন এলাকার সমস্ত মানুষ। নিমন্ত্রিতরা প্রত্যেকেই খাবারদাবার সহ গোটা আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। একদিকে সবাই যেমন মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন, তেমনই নবদম্পতিকে আগামী জীবনের জন্য শুভেচ্ছাও জানাচ্ছেন তাঁরা।