Silda Attack Case,শিলদা-হামলা: ১৩ জনকে যাবজ্জীবন দিল আদালত – silda attack case the medinipur court gave life sentence to 13 people


এই সময়, মেদিনীপুর: শিলদার ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলার ঘটনায় মঙ্গলবারই ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। আর বুধবার এঁদের মধ্যে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল মেদিনীপুর আদালত। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের জেল। দোষী সাব্যস্ত বাকি ১০ জনের সাজা ঘোষণা হবে আজ, বৃহস্পতিবার।বুধবার সাজা ঘোষণার পরে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার সময়ে মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য বিকাশ ওরফে মনসারাম হেমব্রম, তাঁর স্ত্রী তারা ওরফে ঠাকুরমণি হেমব্রমরা বলেন, ‘এই মামলায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে সাক্ষী সাজিয়ে এনে আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। একজন সাক্ষীরও কোনও নথি নেই। রাজ্য সরকারের ক্ষমতা থাকলে ঠিক সাক্ষী এনে বিচারের মতো বিচার করা হোক।’

প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথাও জানান তাঁরা। দোষীদের পরিবারের প্রশ্ন, ১৪ বছর আগের ওই ঘটনায় সুচিত্রা মাহাতো, জাগরী বাস্কেদের নাম জড়ালেও তাঁরা কেন ছাড়া পেয়ে গেলেন? ২০১০-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২৪ জন জওয়ানের। ১৪ বছর ধরে চলে বিচারপর্ব। হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত মাওবাদী নেতা মনসারাম এবং তাঁর স্ত্রী ঠাকুরমণি-সহ চার্জশিটে নাম থাকা ২৫ জনের মধ্যে ২৩ জনকে মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করেন মেদিনীপুর ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতের বিচারক সেলিম শাহি।

বুধবার তাঁদের মধ্যে ১৩ জনের সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। মনসারাম, ঠাকুরমণি ছাড়াও এ দিন সাজাপ্রাপ্ত হন কল্পনা মাইতি ওরফে অনু ওরফে রিনা, মানস মাহাতো, কাজল মাহাতো, মঙ্গল সোরেন, সনাতন সোরেন, শুকলাল সোরেন, কানাই হাঁসদা, রাজেশ হাঁসদা ওরফে ভাঁটু, ‌শ্যামচরণ হাঁসদা, রাজেশ মুণ্ডা এবং ইন্দ্রজিৎ কর্মকার।

প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার সময়ে একে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। মনসারামের বক্তব্য, ‘জঙ্গলমহলের মানুষকে ফাঁসানো হয়েছে। সিপিএম সরকার আমাদের গ্রেপ্তার করেছিল, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সাজা ঘোষণা করল। এ বিচার মানছি না।’ সাজা ঘোষণার পরে প্রবল ক্ষোভ দেখাতে থাকেন মানসের স্ত্রী নমিতা মাহাতো।

বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ক্ষমতায় এলে জঙ্গলমহলের জেলবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। ঘটনার পর ক্যামেরার সামনে বিবৃতি দিয়ে সুচিত্রা মাহাতো, জাগরী বাস্কেরা ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল। তারা ছাড়া পেয়ে গেল! আর আমার স্বামীর মতো যারা খেটে খেত, তাদের তুলে এনে গ্রেপ্তার করে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হলো! এটা ঠিক বিচার হলো?’

Silda EFR Camp Attack : শিলদাকাণ্ডে ২৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত আদালতের, কী হয়েছিল ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি?

রায় শুনে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক সাজাপ্রাপ্তের বৃদ্ধা মা। বলেন, ‘আমার ছেলের এমন শাস্তির চেয়ে মৃত্যু হওয়া ভালো।’
অন্যদিকে, এই রায়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি হামলায় নিহত জওয়ানদের পরিবার। তাঁদের অধিকাংশই ছিলেন দার্জিলিং ও অসমের বাসিন্দা। পাঁচ জন খড়্গপুরের সালুয়ার।

জীবন ছেত্রী, সুরজ বাহাদুর থাপা, মধুকাওর সুব্বাদের পরিজন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘দোষীদের শাস্তি হওয়ায় আমরা খুশি। আরও কঠোর শাস্তি হলে বেশি খুশি হতাম।’ এই মামলায় ২০১০ সাল থেকে একাধিক বার চার্জশিট দাখিল হয়েছে। ৭০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। শেষমেশ চার্জ গঠিত হয় ২৫ জনের বিরুদ্ধে। এঁদের মধ্যে সুদীপ চোংদারের মৃত্যু হয়। অন্য একজনকে আগেই জুভেনাইল কোর্টে পাঠানো হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *