গোবিন্দপুর গ্রামের এক ব্যক্তি ওবায়েদুর রহমান জানাচ্ছেন, ‘আমরা রতুয়া ১ ব্লকের ভোটার৷ ৪০-৪৫ বছর ধরে এই এলাকায় আছি৷ বাম আমল থেকেই আমরা উপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়ে আসছি৷ তৃণমূল আমলে এলাকার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী তজমুল হোসেনকেও সব জানিয়েছি৷ কিন্তু পাকা সেতু আর হয়নি৷ ফুলহর নদীর ক্যানালের উপর এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন৷ বিহারের লোকজনকেও এই রাস্তা দিয়েই মালদা যেতে হয়৷ বিধানসভা ভোট আসলেই বিধায়করা বলেন, এবারই সেতু হবে৷ ভোট মিটে যাওয়ার পর তাঁরা সব ভুলে যান, সব মিথ্যে৷ তাই পাকা সেতু না পেলে এবার আমরা লোকসভা ভোট দেব না৷’
পাশের হাতিচাপা গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ হোসেন বলেন, ‘পাকা সেতুর দাবিতে আমরা বিডিও, সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ম্যানেজার, জেলা শাসক সহ সবাইকে জানিয়েছি৷ বিধায়ককে বারবার বলা হয়েছে৷ তিনি এসে সব দেখেও গিয়েছেন৷ সেতুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন৷ কিন্তু কাজ হয়নি৷ তাই এবার সেতু ছাড়া ভোট নেই৷’ পাশাপাশি এলাকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মৌসম নূর খাতুন বলে, ‘স্কুলে যেতে এই সাঁকোই আমাদের ভরসা৷ বেহাল সাঁকোয় সাইকেল ভাঙে, আমরা জলেও পড়ে যাই৷ অনেকদিন ধরে এই অবস্থা৷ সাঁকো পেরোতে আমাদের ভাড়াও গুনতে হয়৷ তাই আমরা একটা ব্রিজ চাই৷’
এই বিষয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি তথা মালদা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেন, ‘ভোট বয়কট করে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না৷ তবে গ্রামবাসীদের দাবি নায্য৷ ওখানে সত্যিই একটি পাকা ব্রিজ দরকার৷ ২০২১ সালে আমরা ব্রিজ তৈরির চেষ্টা করেছিলাম৷ কিন্তু টাকার অভাবে কাজ করা যায়নি৷ এবার আমরা জেলা পরিষদের দায়িত্বে৷ এবার কাজটা করা যাবে৷ বিধায়ক কী বলেছেন জানি না, তবে ওখানে একটা ব্রিজ তৈরির জন্য আমি দায়বদ্ধ৷’
এদিকে এই বিষয়ে বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘গোটা বিষয়টি জানা আছে। দীর্ঘদিনের দাবি, রাজ্য সরকার বিষটির ওপরে নজর রেখেছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে এই সেতুটি করা হবে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে জানিয়েছি।’ তবে সেতুটি ভোটের আগে না পরে হবে সেই বিষয়ে অবশ্য নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
এদিকে গোটা ঘটনা নিয়ে কটাক্ষের সুরে বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘সমরবাবু চিরদিনই মানুষকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেন৷ ফুলহরের ক্যানাল ব্রিজ তৈরির জন্য তিনি বহুবার মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ কিন্তু ৪-৫ বার বিধায়ক হলেও তা পালন করেননি৷ ক্ষোভে সেখানকার মানুষ ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে৷’