এ দিন বৈঠকের শুরুতে মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীকে নেত্রী বলেন, ‘আপনি সিনিয়র লোক। ধীরে ধীরে সংগঠনটা দেখুন।’ এরপর তিনি বলেন, ‘আমি সব খবর রাখি। ওদের সঙ্গে তো আপনার যোগাযোগ বেড়েছে।’ ওদের বলতে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলতে চেয়েছেন কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে মমতা বলেন, ‘তুমি কাজ করছ না। গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে ব্যস্ত থাকছ। এ সব ঠিক নয়। তোমাকে শেষ বারের মতো সতর্ক করলাম। এ সব চলবে না।’ তমলুকে জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত বিপ্লব রায়চৌধুরী। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দল অনেক দিনের। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, লোকসভা নির্বাচনের আগে দুই গোষ্ঠীকে ধমক দেওয়ার পাশাপাশি সতর্ক করলেন নেত্রী।
শুধু তাই নয়, লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী কে জানতে চাওয়ায় মন্ত্রী অখিল গিরিকে নেত্রীর ধমকের মুখে পড়তে হয় বলে খবর। দল প্রার্থী ঠিক করবে বলে নেত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন। নন্দকুমারে দলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করার পাশাপাশি এলাকার বিধায়ক সুকুমার দে ও উত্তম বারিককে বিষয়টা দেখে মিটিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেন তিনি।
দলীয় বৈঠকে নেত্রীর ধমক নিয়ে কোনও দলীয় নেতৃত্ব মুখ খুলতে চাননি। তবে বৈঠকের পর সভামঞ্চে দুই মন্ত্রী ও বিধায়কদের চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়। একমাত্র প্রাক্তন বিধায়ক ও হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোর্তিময় কর মুখ্যমন্ত্রীর আগে বক্তব্য পেশ করেন। তবে বিপ্লব রায়চৌধুরী ধমকের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘মিডিয়ার কেউ কেউ ভুল খবর দেখাচ্ছে। নেত্রী কাউকে ধমক দেননি। সংগঠনটা শক্ত হাতে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন।’
আর অখিল গিরির পরিষ্কার কথা, ‘আমি প্রার্থী নিয়ে জানতে চাইনি। সেখানে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। কী আলোচনা হয়েছে সকলে দেখেছেন, শুনেছেন। নেত্রী কোন্দল মিটিয়ে সকলকে সংগঠন শক্তিশালী করার নির্দেশ দিয়েছেন।’