Basanti Highway : টোটো-ভ্যানে বিপদ ডেকে আনছে বাসন্তী রাজ্য সড়কে – toto and van are causing danger on the basanti state highway


প্রশান্ত ঘোষ, ভাঙড়

দৃশ্য ১: বামুনিয়া বাজার থেকে একটি টোটোয় চার স্কুলপড়ুয়া ঘটকপুকুরে আসছিল। বামুনিয়া কালভার্টের কাছে একটি পণ্যবাহী লরি এমন ভাবে টোটোকে ওভারটেক করল, যে টোটো চালক প্রাণ বাঁচাতে গাড়িটিকে ফুটপাথে তুলে দিলেন। বাচ্চারা লাফ দিয়ে নেমে পড়ল টোটো থেকে।দৃশ্য ২: একটি ইঞ্জিন ভ্যানোয় বানতলা চর্মনগরী থেকে পাগলাহাট আসছিলেন ১৪-১৫ জন ঠিকাশ্রমিক। ভোজেরহাট বাজার পেরোতেই উল্টোদিক থেকে আসা বাসের গতি দেখেই চিৎকার করে উঠলেন শ্রমিকরা। আর একটু হলেই ডানদিকে পা ঝুলিয়ে বসে থাকা কয়েকজন শ্রমিকের পা কাটা পড়তে পারত, বাস এতটাই গা ঘেঁষে গিয়েছে।

এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন দৃশ্য নয়, প্রায় নিত্যকার চেনা ছবি। মঙ্গলবারই হুগলির গুড়াপে ডাম্পারের ধাক্কায় টোটোর সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। যে কোনও দিন একই ঘটনা ঘটতে পারে দক্ষিণের লাইফ লাইন বাসন্তী রাজ্য সড়কেও। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সঙ্কীর্ণ রাজ্য সড়কে যে ভাবে হাজার হাজার ভ্যানো, টোটো চলাচল করে তাতে যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এর আগেও রাজ্য সড়কে একাধিক দুর্ঘটনায় বেশ কয়েক জনের প্রাণ গিয়েছে ভাঙড়ে। তবু ভ্যানো-টোটোর চলাচল রোখা যায়নি বাসন্তী রাজ্য সড়কে। কলকাতার ইএম বাইপাসের সায়েন্স সিটি থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার জুড়ে এই রাস্তার বিস্তৃতি। কলকাতা পুলিশের আনন্দপুর, লেদার কমপ্লেক্স, পোলেরহাট, ভাঙড় থানা ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দু’টি এবং উত্তর ২৪ পরগনার তিনটি থানা নিয়মিত নজরদারি চালায় এই রাস্তায়।

শুধু সুন্দরবন নয়, এই সড়ক ধরে বসিরহাট, হাসনাবাদ, টাকি, হিঙ্গলগঞ্জ, ন্যজাট, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, ধামাখালি প্রভৃতি জায়গায় যাওয়া যায়। যাত্রীরা রুটি-রুজির জন্য বাস, ট্রেকার, অটো, ম্যাজিকের পাশাপাশি সস্তায় যাতায়াতের জন্য নিত্যদিন ভ্যানো, টোটোয় চাপেন। যা অত্যন্ত ঝুঁকির।

বেশির ভাগ ভ্যানোর ব্রেক, হর্ন, হেডলাইট বলে কিছুই নেই। অথচ শুধু দিনের বেলা নয়, রাতের বেলাও দিব্যি চলছে এইসব ভ্যানো। পাশাপাশি বাড়তি মুনাফার লোভে অনেকেই অতিরিক্ত যাত্রী তোলেন। কয়েকদিন আগেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভোজেরহাটে দুর্ঘটনার কবলে পড়লে এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। পাগলাহাট, ঘটকপুকুর, বামুনিয়াতেও গত কয়েক বছরে একের পর এই ভ্যানো উল্টে প্রাণ গিয়েছে অনেকগুলি। ভ্যানো উল্টে ভাঙড়ের এক স্বাস্থ্যকর্মী আজও শয্যাযায়ী।

বারুইপুর মোটর ভেহিকেলসের এক কর্তা বলেন, ‘পরিবহণ দপ্তর থেকে ই-রিকশা বা টোটো চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কাটা তেলে চলা ইঞ্জিন ভ্যান অবৈধ। যতটুকু চলে তা গ্রামের দিকে চলে জন প্রতিনিধিদের মদতে। আমাদের কিছু করার নেই। কলকাতা পুলিশের পরিষ্কার গাইড লাইন আছে শহরের রাস্তায় ইঞ্জিন ভ্যান চালানো যাবে না। তাই আমরা মাঝে মধ্যেই ধড়পাকড় করি। তারপরেও ভ্যানো চলে নিজের নিয়মে।’

Toto Rickshaw : জাতীয় সড়কে নিষিদ্ধ টোটো-ভ্যান, কিন্তু দেখছেই বা কে?

বাসন্তী রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে বুধবারই ভাঙড় ট্র্যাফিক গার্ডের উদ্যোগে কনভিক্স মিরর লাগানো হয়েছ তীক্ষ্ণ বাঁক ও ব্লাইন্ড স্পটগুলিতে। ভ্যানো ও টোটোতে রেট্রো রিফ্লেক্টিভ স্টিকার লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের (দক্ষিণ) ডেপুটি কমিশনার অমিতকুমার সাউ বলেন, ‘রাজ্য সড়কেও ভ্যানো ও টোটো চলাচল যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেজন্য ওদের ইউনিয়নের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে। আপাতত রাতে ভ্যানো, টোটো চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *