Ramadan 2024,দেখভাল থেকে রোজা পালন, বারাসতের আমানতি মসজিদের সঙ্গে আত্মিক যোগ বসু পরিবারের – barasat hindu family taking care to amanati masjid since 1960


১৯৬০ সাল থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের আমানতি মসজিদের দেখাশোনা করে আসছে স্থানীয় বসু পরিবার। এখন চলছে রমজান মাস। তাই এই রমজান মাসে রোজা রাখছেন বসু পরিবারের এই প্রজন্মের সদস্য প্রার্থসারথি বসু। ১৪ বছর ধরে তিনি রোজা রাখেন। পার্থসারথি যেমন কালিপুজোর উপোস করেন, সরস্বতী পুজো অঞ্জলি দিয়ে জলস্পর্শ করেন, ঠিক তেমনই রোজা শেষে করেন ইফতার।উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের আমানতি মসজিদ আজ সকলের চেনা। বিনিময় প্রথার মাধ্যমে এই ভিটে পরিবর্তন হয়েছিল একসময়। বর্তমানে যেখানে আমনতি মসজিদ অবস্থিত, সেই জমি একসময় ওয়াজ উদ্দিন মোড়ল নাম এক ব্যক্তির ছিল। পরে এই জমি আদতে বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা বসু পরিবারের সঙ্গে বিনিময় হয়। সালটা ১৯৬০। সেই থেকে এই জমির মালিক বসু পরিবার, যার বর্তমান প্রজন্ম পার্থসারথি বসু সমস্তটা দেখাশোনা করেন। বসু পরিবার জমিতে আসার পর দেখতে পায়, ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পরে রয়েছে এই মসজিদ। মসজিদের সঠিক বয়স বলা সম্ভব নয়। জানা যায় এই মসজিদ শের শাহের আমল থেকে। সেই মসজিদেরউই দেখাশোনা করে আসছে বসু পরিবার। এমনকী মসজিদটি কী ভাবে আরও ভালো করা যায়, সেই পরিকল্পনাও রয়েছে বসু পরিবারের।

পার্থসারথি বসুর পরিবার মসজিদেক দেখাশোনা তো ১৯৬০ সাল থেকেই করে আসছে। কিন্তু রোজা প্রথম রাখেন পার্থসারথি। সালটা ২০১০,পার্থবাবু বাইক দুর্ঘটনায় হাত ভেঙে যায়। হাত অপারেশন করে স্ক্রু বসিয়ে হাড় জোড়া লাগানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেই সময় মসজিদে এসে পার্থসারথি জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও না কোনও ভুল করেছেন, যার কারণে এই শাস্তি পেতে হল তাঁকে। তিনি মনে মনে সেইদিন থেকেই মানত করেন যদি তাঁর হাত ঠিক হয়ে যায়, তাহলে তিনি রোজা রাখবেন। মসজিদের মাটি ভাঙা হাতে মাখাতেও শুরু করেন। ধীরে ধীরে তাঁর ভাঙা হাড়ও জোড়া লেগে যায়। সেই থেকে টানা ১৪ বছর আর পাঁচটা মুসলিম ভাইদের মতো করেই রমজান মাস পালন করে আসছেন তিনি। আগামীদিনেও একইভাবে পালন করে যাবেন বলেও জানান তিনি।

দুই বাংলা সহ গোটা পৃথিবীর মানব সম্প্রদায়ের কাছে পার্থসারথি বসুর বার্তা, ‘আগে সকলে মানুষ, সবার আগে আমরা সবাই মানুষ, ধর্ম আসে পরে। তাই ধর্ম নিয়ে যাঁরা হানাহানি, হিংসায় জড়িয়ে, তাঁরা বিরত থাকুন। কোনও মন্দির ভেঙে মসজিদ নয় এবং কোনও মসজিদ ভেঙে মন্দির নয়। সকলে মিলেমিশে একে অপরের পাশে যাতে বন্ধুর মত থাকতে পারি, সেই চেষ্টাই সকলের করা উচিৎ।’ একইসঙ্গে এই আমানতি মসজিদের ইমাম মওলানা আক্তার আলি মনে করেন, যখন গোটা পৃথিবীতে ধর্ম নিয়ে হানাহানি, তখন হিন্দু মুসলিম দুই ভাই মিলে বছরের পর বছর এইভাবে মসজিদটিকে দেখাশোনা করে আসছে। যেখানে নেই কোন ভেদাভেদ, যেখানে নেই কোনও আমরা ওরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *