কেননা, জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ জেলা প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হলেও মেরামতির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থই না কি বরাদ্দ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। পূর্ত দপ্তরের জাতীয় সড়ক বিভাগের নয় নম্বর ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রমেন মণ্ডল বলেন, ‘রাস্তা মেরামতির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা দরকার। কেন্দ্রীয় সরকার এই খাতে এখনও অর্থ বরাদ্দ করেনি। বরাদ্দ এলেই কাজে নামা হবে।’
সিকিমগামী এই জাতীয় সড়ক নিয়ে এই উদাসীনতাই পর্যটন ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ উস্কে দিয়েছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘কেন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সচল রাখা দরকার সেটা কি কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ দপ্তর বোঝে না! বার বার এই রাস্তার মেরামতি নিয়ে উদাসীনতা দেখানো হচ্ছে। ফলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন ছাড়া উপায় দেখছি না। পয়লা এপ্রিলের মধ্যে রাস্তা মেরামতি না-হলে এ বার আন্দোলনে নামা হবেই।’
উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি কেবল সিকিমের সঙ্গে দেশের যোগাযোগই রক্ষা করে না, ভারত-চিন সীমান্তে পাহারারত সেনা জওয়ানদের খাবার সরবরাহের অন্যতম মাধ্যম। সারা দিন এই রাস্তা দিয়ে দশ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে, যার মধ্যে সেনা জওয়ানদের মালবাহী গাড়ি উল্লেখযোগ্য। বাকিটা নিত্যযাত্রী, সিকিমের বাসিন্দাদের পণ্য পরিবহণের গাড়ি এবং পর্যটকদের যানবাহন।
তিস্তা নদীর ধার ঘেঁষে পাহাড় কেটে তৈরি এই রাস্তার একপাশ দিয়ে সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত রেললাইন তৈরির কাজ চলছে। অন্যদিকে, তিস্তা নদীতে একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। একদিকে রেললাইনের খনন, অন্যদিকে, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে ছাড়া জলের জন্য নিয়মিত ভাবে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
গত বছর অক্টোবরে সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাস্তাটি আরও বেহাল হয়ে পড়ে। সেই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ত দপ্তরের কাছ থেকে মেরামতির দায়িত্ব নিয়ে তুলে দেয় জাতীয় সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়ন পর্ষদের হাতে। অভিযোগ, জাতীয় সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়ন পর্ষদ সেই মেরামতির কাজ দায়সারা ভাবে করে চলে গিয়েছে।
সামান্য বৃষ্টি নামলেই রবিঝোরা এবং লিকুবীরে বার বার পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে রাস্তায় নামছে। ফলে প্রাণহানি এড়াতে জেলা প্রশাসন রাস্তা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। জাতীয় সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়ন পর্ষদের কোনও আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।