ঘন ঘন ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রভাবে এ বছর ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বেশ কয়েক দিন বৃষ্টি পেয়েছে রাজ্য। হয়তো সেই জন্যই এ বার কিছুটা দেরি করে গরম তার দাপট দেখাতে শুরু করেছে। দেরি হলেও গরমের প্রাবল্য যে কিছুমাত্র কম হবে, তেমন আশ্বাস মিলছে না। আর দুশ্চিন্তাটা এখানেই। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহেই শুরু হয়ে যাচ্ছে লোকসভা নির্বাচনের পর্ব।
রাজ্যে প্রথম দফা নির্বাচনের দিনটি আর ১৮ দিন দূরে। ওই দিন রাজ্যের আবহাওয়া কেমন থাকতে পারে? প্রশ্নটা কেবল প্রার্থী, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মী-সমর্থকদের এবং সম্ভাব্য ভোটকর্মীদের নয়। এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আগ্রহী সাধারণ মানুষও।
আবহবিদরা এক রকম নিশ্চিত যে, নিয়মিত বৃষ্টি যদি নতুন করে গরমের পথে বাধা না-হয়, তা হলে ১৮ দিন পরে যে গোটা রাজ্যে গরমের জ্বালা আরও বাড়বে। তখন কত হতে পারে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার তাপমাত্রা? কিছুটা আন্দাজ পেতে এক বছর আগের ১৯ এপ্রিলের পরিস্থিতি মনে করার চেষ্টা করছেন অনেকেই।
আলিপুর হাওয়া অফিসের রেকর্ড বলছে, ২০২৩-এর ১৯ এপ্রিল রাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, ওই দিন রাজ্যের অন্তত ১২টি জায়গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। আবহবিদদের রেকর্ড বলছে, ২০২৩-এর এপ্রিলে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পাঁচ-পাঁচবার ৪০ ডিগ্রির ঘর পার করেছিল।
এ বারও কি পরিস্থিতি তেমনই হতে চলেছে? আবহবিদরা অবশ্য এত আগে থেকে কোনও পূর্বাভাস দিতে রাজি নন। তবে এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে শুরু হওয়া নির্বাচন চলবে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। অর্থাৎ বাংলার, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের কুখ্যাত আর্দ্র গরম যে সময় জুড়ে সব চেয়ে বেশি থাকে, সেই সময়েই পুরো ভোটপর্ব কাটবে। তবে আবহবিদদের বক্তব্য, সান্ত্বনা একটাই— এ বছর ফেব্রুয়ারিতে কলকাতা তিন দিন ও মার্চে ছ’দিন বৃষ্টি পেয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জায়গায় বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেশি। ২০২৩-এ পরিস্থিতি এমন ছিল না। আলিপুর হাওয়া অফিসের রেকর্ড বলছে, ২০২২-এর ২৪ অক্টোবরের পর কলকাতা আবার বৃষ্টি পেয়েছিল ২০২৩-এর ১৭ মার্চে। পাক্কা ১৪১ দিনের ব্যবধানে। সে জন্যই এই বছর এখনও পর্যন্ত মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ১৯ এপ্রিলের অবস্থা গত বছরের মতো নির্মম হয়তো হবে না— এমন আশা করা যেতে পারে বলে আবহবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন।