সম্প্রতি, সন্দেশখালিতে ভেড়ি এবং জমি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া শেখ শাহজাহানও অনুব্রত, জ্যোতিপ্রিয়দের মতো একই জুতোয় পা গলিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ইডি-র। গ্রেপ্তারের পরে শাহজাহানের মেসার্স এসকে সাবিনা ফিসারিজ-এর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ওই সংস্থাটি তাঁর মেয়ের নামে হলেও মালিক শাহজাহান নিজেই। আপাতত ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ১৩৭ কোটি টাকার বেআইনি লেনদেনের হদিস মিলেছে। এই মামলার তদন্তে ইডি-র হাতিয়ার হয়ে উঠেছে একটি আন্তর্জাতিক নামী চিংড়ি এক্সপোর্ট সংস্থার তিন অংশীদারের বয়ান। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখে এদের মধ্যে একজনের বক্তব্য রেকর্ড করেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
ওই ব্যবসায়ীর বক্তব্য, কয়েক বছর আগে অফিসে দেখা করতে এসে প্রথমে সাবিনা ফিসারিজ সঙ্গে ব্যবসা করার অফার দেন শাহজাহান। কিছুদিন পরে ভুয়ো বিল তৈরি করতে চাপ দিতে শুরু করেন তিনি। সেই টাকা সংস্থার অ্যাকাউন্টে জমাও পড়ে। ইডি সূত্রে খবর, ২০১২-২২ সালের মধ্যে ১০৪ কোটি এবং ২০১৮-২০ সালে ৩৩ কোটি টাকার বেআইনি লেনদেনের হদিস মিলেছে।
কিন্তু আরও ১৮-২০টি অ্যাকাউন্টে আরও কী কী তথ্য উঠে আসে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, এই ফর্মুলা নতুন নয়। গোরু পাচারে ধৃত অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যার নামও জড়িয়ে গিয়েছিল ওই মামলায়। শেষ পর্যন্ত বাবা-মেয়ের ঠাঁই হয় তিহাড় জেলে। শিক্ষা দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে গ্রেপ্তার হন তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়।
স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতে অর্পিতা ছাড়াও, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর প্রয়াত স্ত্রী, মেয়ে এবং জামাইয়ের নামও জড়িয়েছে। সম্প্রতি রেশন দুর্নীতির তদন্তেও প্রাক্তন খাদ্য তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও ঢাল করেছিলেন পরিবারকেই। ধরা পড়ার পর অবশ্য প্রত্যেকেই দাবি করছেন, আর্থিক লেনদেনে কোনও অনিয়মও নেই। মামলা বিচারাধীন। ফলে তদন্তকারী অফিসার এবং অভিযুক্তরা নিজেদের মতো করে অভিযোগ খারিজও করছেন।