Hooghly Lok Sabha,নদী ভাঙনে ঘুম উড়েছে বলাগড়বাসীর, ভোটের আগে ফের শুরু শাসক-বিরোধী তরজা – hooghly balagarh river erosion become a big problem for local people


বলাগড়ে আজও ভাঙছে নদী পাড়। ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গার তীরবর্তী এলাকা। যার জেরে চিন্তায় বলাগড়বাসী। আর এই ভাঙনকে ঘিরে তরজায় প্রার্থীরা। কয়েকদিন আগে গুপ্তিপাড়ার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীর পাড় ভেঙে তলিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দারা মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অভিযোগ, গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে বহু চাষের জমি ঘরবাড়ি। আসলে বলাগড়ের ভাঙন সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেই সমস্যা কবে মিটবে, বা আদৌ মিটবে কি না জানা নেই বলাগড়বাসীর। তবে নির্বাচন এলেই প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে বলাগড়ের নদী ভাঙন। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এবারও তার কোনও ব্যতিক্রম নেই।ভোট এলেই দেখা মেলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের, মেলে প্রতিশ্রুতিও। কিন্তু আদতে বাসিন্দাদের সমস্যার কোনও সমাধান হয় না বলেই অভিযোগ। গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের ফেরিঘাট সংলগ্ন গঙ্গা পাড়ে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানান হয়। সেই মতো ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করে রাজ্য সরকার গঙ্গা ভাঙন রোধে কাজ করছে। বোল্ডার ফেলে, বালির বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা হয়। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যেভাবে গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে একদিন পুরো এলাকাটাই গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যেতে পারে। বড় প্রকল্প না হলে গঙ্গা ভাঙ্গন রোধ করা যাবে না।

ঠিক কী পরিস্থিতি?

এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা টিঙ্কু বৈদ্য বলেন, ‘বর্ষা এলেই শুরু হয় গঙ্গার ভাঙন। বিঘার পর বিঘা জমি বঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যায়। একসময় যে জায়গায় চাষ হত, এখন সেই জমি গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে গিয়েছে। গুপ্তিপাড়া, চরকৃষ্ণবাটি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এই গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে। বাম আমল থেকেই মিলে আসছে প্রতিশ্রুতি, বর্তমান সরকারের আমলেও সেই একই প্রতিশ্রুতির বন্যা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। বিদায়ী বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেও কোন সমস্যার সমাধান হয়নি। ফেরিঘাট পার করে যাতায়াত করতেও সমস্যা হয় আমাদের। আবার দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে ভোট। তাই যেই জিতুক, তাদের কাছে দাবি থাকবে গঙ্গা ভাঙন রোধ করার।’

গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, ‘গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই গঙ্গার ভাঙন চলছে। তারমধ্যে ফেরি ঘাটের ডানদিকে প্রায় দেড়শো মিটার ও বাঁদিকে প্রায় ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। পাড়ায় সমাধানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়। তবে যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তাতে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে রোধ করা সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে ভাঙন রোধে কাজ করা প্রয়োজন। হুগলি লোকসভায় যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের কাছে করজোরে আবেদন, বলাগড়বাসীর পাশে দাঁড়ান।’

কী বলছেন প্রার্থীরা?

এই প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বলাগড়ের ভাঙন একটা বড় ইস্যু। তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য যদি না থাকে, দিদি একা কত লড়াই করবেন? পশ্চিমবঙ্গকে উন্নতমানের করার জন্য দিদি লড়াই করেই চলেছেন। যদিও দিদি টাকা দিয়েছেন, তার কাজ চলছে। তারপরেও টাকার দরকার। এলাকার পাঁচ বছরের সাংসদ, তাঁকে দেখা যেত না, এখন তাঁকে দেখা যাচ্ছে। আমি সাংসদ হলে সংসদে গঙ্গা ভাঙন রোধে প্রথম আওয়াজ তুলবো।’

বলাগড়ের ভাঙন একটা বড় ইস্যু। তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য যদি না থাকে, দিদি একা কত লড়াই করবেন?

রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়

পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি (রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়) কিছু জানেন না। যা শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাই বলছেন। গঙ্গা ভাঙন রোধে প্রচুর টাকা কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে দিয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা রাজ্য সরকার খরচ করেনি। কেন খরচা করেনি? কত টাকা এসেছিল সেটা তৃণমূল প্রার্থীকে জিজ্ঞেস করুন? আমি ১৭ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার কাজ করেছি, তার হিসেব দিয়েছি। গত ১৩ বছরে কী কাজ হয়েছে, সেটার হিসাব তৃণমূল প্রার্থী দিক।’

গঙ্গা ভাঙন রোধে প্রচুর টাকা কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে দিয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা রাজ্য সরকার খরচ করেনি।

লকেট চট্টোপাধ্যায়

অন্যদিকে সিপিএম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষ বলেন, ‘মাস্টার প্ল্যান করার কথা ছিল। তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা ও রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা থাকা দরকার। দু’টো সরকারের সমস্যা সমাধানের যে ইতিবাচক ভূমিকা থাকা দরকার, সেটা তাদের নেই। তৃণমূল শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়। আগে তৃণমূলের যে সংসদ ছিলেন, তিনিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিছুই হয়নি। তৃণমূল বিজেপি, তারা শুধু পারস্পরিক তরজা করেছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *