গঙ্গা ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষেরা বর্তমানে সর্বস্ব হারিয়ে, কেউ খোলা আকাশের নীচে, আবার কেউ স্কুলে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বিন নগর হাই স্কুলে ২০১৬ সাল থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত বহু পরিবার বসবাস করছে। সরকার থেকে বাড়িঘর পুনর্বাসন বা আর্থিক সাহায্য এখনও বহু পরিবারই পায়নি। আবার কিছু পরিবার সরকার থেকে জমিয়ে বলি ও সেই জমির পাট্টা আর্থিক সাহায্য পায়নি। লোকসভা ভোট দোরগোড়ায়, এখন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রী প্রার্থী সকলেই আসছেন ভাঙন দুর্গত সেইসব পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে। দেখা করছেন, ভোট ভিক্ষাও করছেন। একইসঙ্গে ফের বয়ে চলেছে প্রতিশ্রুতির বন্যা।
কী বলছেন ভাঙন কবলিতরা?
ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা শিউলি মণ্ডল জানান, ২০১৬ সালে বাড়িঘর গঙ্গায় তলিয়ে যায়। আজকে ২০১৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল, অস্থায়ীভাবে স্কুলে তাঁদের বসবাস করতে হচ্ছে। সরকার থেকে জায়গা জমি বা আর্থিক সাহায্য কিছুই পায়নি। কষ্ট করে স্কুলেই থাকতে হচ্ছে। ভোট আসলেই খালি নেতাদের প্রতিশ্রুতি। যাঁদের অর্থ রয়েছে তাঁরা জায়গা কিনে বাড়ি করে নিয়েছেন, কিন্তু তাঁদের অর্থ নেই, তাই তাঁরা এখনও সেখানেই পড়ে রয়েছেন। তাঁই শিউলির সাফ কথা, এইবারের ভোটে যারা আমাদের কথা শুনবে, আমাদের কথা রাখবে, তাদেরকেই ভোট দেব।’ ফুলকুনি মণ্ডল বলেন, ‘সবাই আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন, কিন্তু কোনও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছি না, বিড়ি বেঁধে রোজগার করছি, জায়গা দিলেও আর্থিক সাহায্য পাইনি, বাড়িঘর পায়নি। কেউ আমাদের খোঁজ খবর রাখে না। যারা আমাদের পাশে থাকবে তাদেরকেই ভোট দিব।’ মেনকা মণ্ডল নামে আরও একজনের মুখেও শোনা গেল একই কথা।
রাজ্য সরকারের সমালোচনায় প্রাক্তন বিধায়ক
এই বিষয়ে বৈষ্ণবনগর বিধানসভার প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন সরকার বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে এই এলাকায় গঙ্গা ভাঙন হয়ে আসছে, আজকে এক হাজার বেশি পরিবারের গঙ্গা ভাঙনে তাদের বাড়িঘর তলিয়ে গিয়েছে। দুঃখের বিষয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৩০০ লোকের পুনর্বাসন করেছে। কিন্তু এখনও কারও পুনর্বাসন করতে পারেনি। রাজ্য সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত হতাশাজনক।’ দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইসা খান চৌধুরী বলেন, ‘ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষেরা খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের পুনর্বাসনের একটা সমস্যাও রয়েছে। আমরা এই বিষয়ে বহুবার রাজ্য সরকার এবং জেলাশাসককে বলেছি। আমাদের দাবি এদের পুনর্বাসন দেওয়া হোক।’