মতুয়াদের ভোট কাটাকুটিতে বনগাঁ কেন্দ্রে তৃণমূল অ্যাডভান্টেজ বলে মনে করছেন শাসকদলের নেতারা। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রটি মতুয়া, নমশূদ্র অধ্যুষিত। সাত বিধানসভার মধ্যে বনগাঁ উত্তর, দক্ষিণ, গাইঘাটা, বাগদা ও হরিণঘাটা কেন্দ্রে মতুয়া এবং নমশূদ্র ভোটারদের বিপুল প্রভাব রয়েছে। এই কেন্দ্রে নমশূদ্র ভোটারের হার প্রায় ১৫%।
আর মতুয়া ভোটার রয়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। তাই ভোটে জয় পরাজয়ের ক্ষেত্রে মতুয়া, নমশূদ্র ভোটাররা বড় ফ্যাক্টর। গত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া-সহ উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতির তাস খেলে বনগাঁ কেন্দ্রে বাজিমাত করেছিল বিজেপি। মতুয়া ভোট ভাগ হয়েছিল তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। সাংসদ হয়েছিলেন শান্তনু। এ বারেও তিনি বিজেপি প্রার্থী।
কিন্তু তাঁর খাসতালুকেই মতুয়া সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হওয়ায় মতুয়া ভোট এ বার তিন ভাগ হবে। শান্তিহরি গুরুচাঁদ মতুয়া ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিনের সংগঠন। মতুয়াদের উন্নয়নে কাজ করে এই সংগঠন। বনগাঁ কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী সুমিতা পোদ্দারের বাড়ি নিউ টাউনে। দীর্ঘদিন ধরেই মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সুমিতা।
শান্তনুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মতুয়া ভক্ত হিসেবেই সুমিতার পরিচিতি রয়েছে। সম্প্রতি ঠাকুরবাড়ির ঘটনা প্রবাহ নিয়ে বীতশ্রদ্ধ সাধারণ মতুয়ারা। বিশেষ করে বারুনির মেলা চলাকালীন জোর করে তালা ভেঙে বড়মার মন্দির শান্তনু ঠাকুরের দখল নেওয়াটা ভালোভাবে নেননি অধিকাংশ মতুয়া ভক্ত। ফাউন্ডেশনের বক্তব্য, গত পাঁচ বছরে সদস্য পদের জন্য মতুয়া কার্ড করা ছাড়া মতুয়াদের উন্নয়নে কোনও কাজ করেননি শান্তনু।
সুমিতা বলেন, ‘মতুয়া, নমশূদ্রদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পালিত হয়নি। সম্প্রতি ঠাকুরবাড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। মতুয়ারা এ দেশের নাগরিক। তা সত্ত্বেও নাগরিকত্বের জন্য কেন নতুন করে আবেদন করতে হবে মতুয়াদের? আশা করছি মতুয়া,নমশূদ্র ভোটাররা আমার পাশেই থাকবেন।’
বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘সুমিতা পোদ্দার প্রার্থী হওয়ায় আমাদের কোনও সমস্যা নেই। মতুয়াদের ও ঠাকুরবাড়ির যাবতীয় উন্নয়নের কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে মতুয়া ভোট তৃণমূলের পক্ষেই থাকবে।’ এই প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।