এই বার ‘টেস্টেড সৈনিক’ জয়ন্ত কুমার রায়ের উপরেই ভরসাই রেখেছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রার্থী মুখ বদলেছে তৃণমূল। বিধায়ক, অধ্যাপক নির্মলচন্দ্র রায়কে এবার জলপাইগুড়ি লোকসভা নির্বাচনের সৈনিক হিসেবে বেছে নিয়েছে জোড়াফুল শিবির। ধূপগুড়ি গার্লস কলেজে অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক ছিলেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন BJP-র প্রার্থী বিষ্ণুপদ রায়। তাঁর মৃত্যুর পর সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাজবংশী অধ্যুষিত আসনটি গেরুয়া শিবিরের হাত থেকে ছিনিয়ে আনতে পেরেছিলেন নির্মল চন্দ্র রায়। উত্তরবঙ্গের এই আসনটি গেরুয়া শিবিরের হাত থেকে তিনি ছিনিয়ে নেবেন, আশাবাদী রাজ্যের শাসক দল।অন্যদিকে, বামেরা প্রার্থী করেছে শিক্ষক দেবরাজ বর্মনকে।
জলপাইগুড়ি নির্বাচনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করছে?
জলপাইগুড়ি জেলার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে একটি করে নদী-তিস্তা, করলা, করোতোয়া, জলঢাকা, মাল। চা, জঙ্গল এবং পর্যটনে সমৃদ্ধ এই জেলা। একসময় জলপাইগুড়ি লাল দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু, ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়া লাগে জলপাইগুড়িতে। ২০১৯ সাল থেকে জলপাইগুড়িতে দাপট বাড়ে পদ্মের। কিন্তু, ২০২১ সালে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় ঘাসফুল শিবির। জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, মালবাজার, মেখলিগঞ্জে সবুজ আবির ওড়ে। অন্যদিকে, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং ডাবগ্রাম দখল করে গেরুয়া শিহির। পরে অবশ্য ধূপগুড়িতে উপনির্বাচনে তৃণমূল জেতে।
তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের হাওয়া দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে কড়া টক্কর হতে পারে তৃণমূল এবং BJP-র। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৭০১টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ১০৮৬ আসন, গেরুয়া শিবির পায় ৪৭৫ টি আসন, সিপিএম পায় ৭২ আসন।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদে মোট ভোট পড়ে ১০ লাখ ৫১ হাজার ২৪। এর মধ্য়ে তৃণমূল কংগ্রেস পায় ৫ লাখ ৮১ হাজার ৪৩৩ এবং বিজেপি পায় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৪০। বাম পায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৫ ভোট। জয়ন্ত কুমার রায়ের হয়ে প্রচারে দেখা গিয়েছে তাবড় তাবড় BJP নেতাদের।
নির্বাচনের কয়েকদিন আগেই জলপাইগুড়িতে ঝড় হয়েছিল। এই দুর্যোগে যাঁরা ঘর হারিয়েছেন তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। অন্যদিকে, গোটা ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সমবেদনা জানান মোদীও। রাজনৈতিক, প্রাকৃতিক, আর্থিক-সব বিষয় মাথায় রেখে জলপাইগুড়ির নির্বাচন, শেষ হাসি কে হাসবে? জবাব মিলবে ৪ জুন।