Mamata Banerjee: বঙ্গ মডেলে ভিশন দেশ, তৃণমূলের ইস্তেহারে স্বাস্থ্যসাথী – mamata banerjee bengal model of development has been promised to be implemented across india in tmc election manifesto


এই সময়: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ‘বেঙ্গল মডেল’কেই সারা ভারতে বাস্তবায়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোকসভা ভোটের দু’দিন আগে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশিত হলো। দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’ ব্লক ক্ষমতায় এলে জোট সরকারে মাধ্যমে এই ইস্তেহারের প্রতিশ্রুতিগুলি রূপায়ণ করতে উদ্যোগী হবে জোড়াফুল। বুধবার তৃণমূল ভবনে অমিত মিত্র, ডেরেক ও’ব্রায়েন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে জোড়াফুলের ইস্তেহার প্রকাশিত হয়।সেই ইস্তেহারের ‘আবেদন’ অংশে মমতার বার্তা, ‘আমরা প্রতিটি সংকল্প পূরণ করব। তৃণমূল কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করা মাত্রই এই প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে।’ পরে তৃণমূলনেত্রী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ভিশন ছাড়া কোনও মিশন হতে পারে না। আমরা গর্বিত যে আমরা মানুষের সামনে আমাদের মিশন তুলে ধরেছি।’

মোট ১০৪ পাতার এই ইস্তেহারে ‘দিদির শপথ’ শীর্ষক মূল দশটি প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি-ক্রীড়া সমেত বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য নতুন ভাবনা-চিন্তার ছাপ রয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি। সমস্ত বিপিএল পরিবারকে বছরে ফ্রি’তে ১০টি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার, একশো দিনের কাজে চারশো টাকা মজুরি বৃদ্ধির মূল ফ্ল্যাগশিপ প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ‘দিদির শপথ’-এ সিএএ আইন অবলুপ্তি, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু হতে না দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতিও রয়েছে।

tmc election manifesto

তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহার

বছরে ১০টি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ফ্রি-তে দেওয়া যে স্রেফ মুখের কথা নয়, তা অমিত মিত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘সাধারণ মানুষের মধ্যে গবেষণার ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে, গরিব মানুষ বলছেন, যদি গ্যাস ফ্রি-তে পাই ব্যবহার করব। কিন্তু মাসে ৮৫০ টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে মহিলারা কাঠে রান্না করছেন। যে-ই কাঠ পোড়ানো বন্ধ হবে, পরিবেশের উপরে তার বিপুল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনীতিবিদরা ক্যালকুলেট করে দেখতে পাবেন কত পজিটিভ ভ্যালু সৃষ্টি হবে। আমরা ফ্রি-তে গ্যাস দেওয়ার জন্য বাজেট ক্যালকুলেট করেছি। পরিবেশের ক্ষেত্রে যে পজ়িটিভ ভ্যালু সৃষ্টি হবে, তার পাশে ফ্রি-তে গ্যাস দেওয়ার বাজেট কিছুই নয়।’

বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়িত করার পাশাপাশি দেশের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অমিত মিত্রের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের ইস্তেহার কমিটি নতুন রোডম্যাপ দেখাতে চেয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির যে ইস্তেহার প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নেই। দেশে সার্বিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ছোট ও মাঝারি শিল্প স্থাপনের উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের ইস্তেহারে।

পশ্চিমবঙ্গে যে ভাবে ছোট ও মাঝারি শিল্পের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেভাবে দেশেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। অমিত মিত্রের কথায়, ‘কেন্দ্রের হিসেবে বলছে, এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হলে সেখানে ৩৭-৪২টি চাকরি হয়। পশ্চিমবঙ্গে এই ক্ষেত্রে ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। তা হলে কত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ভাবুন। তাই এক্ষেত্রে ঋণ গ্রহণ সহজ করতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য নতুন জাতীয় নীতি তৈরি করা হবে।’

‘BPL তালিকাভুক্ত পরিবারকে বিনামূল্যে ১০টি গ্যাস সিলিন্ডার’, তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে ‘দিদির শপথ’

অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মসংস্থান মসৃণ করতে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে সার্বিক রূপান্তরের জন্য অর্থনীতিবিদ স্বামীনাথনের বিভিন্ন সুপারিশ কার্যকর করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের ইস্তেহারে। বিজেপি জমানায় উত্তর ভারতে একের পর এক কৃষক আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলন করতে গিয়ে কৃষকদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে। এই সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

বিজেপি জমানায় কেন্দ্রীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ক্রমেই হ্রাস পেয়েছে বলে বিরোধী শিবিরের অভিযোগ। সেই জায়গায় তৃণমূলের ইস্তেহারে বাজেট বরাদ্দ ৫ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সর্বভারতীয় পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হওয়া নিয়ে বারবার বিতর্ক হয়েছে। এই প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে লোকসভায় নতুন বিল পেশ করে একটি নয়া পরিকাঠামো তৈরি করার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে ইস্তেহারে।

রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কথায়, ‘এই ইস্তেহারে দিদির শপথ রয়েছে। দিদি শপথ নিলে তা যে কথার কথা থাকে না, বাস্তবে রূপায়িত হয়, বাংলা ছাড়াও সারা দেশের মানুষ দেখেছে। এই ইস্তেহারে যুব, মহিলা, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, তফসিলি জাতি ও উপজাতি সমেত সমাজের সব অংশের কথা বলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এখন ২.১২ কোটি মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান। দেশে এই প্রকল্প প্রসারিত হবে। তখন টাকা দ্বিগুণ হবে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার দেবে, রাজ্য সরকারও দেবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *