Calcutta University,‘কেয়ারিং’ রাখালদার স্মৃতিতে ডে-কেয়ার সেন্টারের ভাবনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের – calcutta university vice chancellor plans to build a children care center name of iconic rakhaldar canteen


কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে আইকনিক রাখালদার ক্যান্টিন আর নেই। বাতিল জিনিসপত্র ডাম্প করার কাজে এখন ব্যবহৃত হয় ক্যান্টিনের জায়গা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-র পরিকল্পনা, ওই স্পেসে রাখালদার নামে শিশুদের জন্য একটা ডে-কেয়ার সেন্টার তৈরি করার। এ জন্য সিন্ডিকেটেও আলোচনা করবেন তিনি।শান্তার বক্তব্য, ‘ক্যাম্পাসে এখন আমার মতো হাতেগোনা ক’জনই আছেন, যাঁরা রাখালদাকে চিনতেন। উনি সারা জীবন আমাদের আগলে রেখেছেন। ছাত্রী হিসেবে তো বটেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি হিসেবেও বহু ভালোবাসা, প্রশ্রয় পেয়েছি ওঁর থেকে। সব সময়ে একটা কেয়ারিং ভাব ছিল।’

রাখালদার সেই কেয়ারিং স্বভাবকে মেনে রেখে এবং ক্যাম্পাসে রাখালদার স্মৃতি ধরে রাখতে ক্যান্টিনের স্পেসে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার খোলার পরিকল্পনা। ওই ক্যান্টিনের স্মৃতি মেদুরতায় আজও ভেসে যান বহু প্রাক্তনী। অতিমারীর সময়ে ক্যান্টিন বন্ধ হয়। তারপর ক্যাম্পাসে সব স্বাভাবিক হলেও রাখালদার ক্যান্টিন যে আর খুলবে না, সে খবর আগেই প্রকাশিত হয়েছে ‘এই সময়’-এ।

ক্যান্টিনের সামনে দিয়ে গেলে আজও অনেকের মনে পড়ে ডিমের ডেভিল, লাল চা, জিভে গজা, ভেজিটেবল চপের কথা। বহু বিতর্ক, বহু বন্ধুত্ব, প্রেম-বিরহের সাক্ষী রাখাল চন্দ্র ঘোষের ক্যান্টিন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক চলনেরই অঙ্গ। নারায়ণ সান্যাল থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য— বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের যাঁরা ক্যান্টিনে গিয়েছেন, তাঁদের তালিকা লম্বা।

২০০৮-এ রাখালদার মৃত্যুর পর সমাজের বহু বিশিষ্ট মানুষ, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেবও শোক প্রকাশ করেন। কিন্তু অতিমারীর জেরে শেষ হয় ক্যান্টিনের পথচলা। সেখানে যে সব বাতিল জিনিস রাখা হয়েছিল, সম্প্রতি টেন্ডার ডেকে সেগুলি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তবে রাখালদার ব্যবহৃত একটি টেবিল আর বহুদিনের পুরোনো একটি ফ্রিজ উপাচার্যের নির্দেশে রেখে দেওয়া হয়।

শান্তার ইচ্ছে, ডে-কেয়ার সেন্টার হলে রাখালদার ছবি, নাম ব্যবহারের পাশাপাশি তাঁর ব্যবহারের ওই দুটো জিনিসও যেন রাখা হয়। শান্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রী-গবেষক-অধ্যাপিকা-শিক্ষাকর্মীরই ছোট সন্তান আছে। অথচ সবার বাড়িতে দেখভাল করার মানুষ নেই। অনেক সময়ে বাইরে থেকে পরীক্ষা দিতে আসা অনেকেও দুধের শিশুকে নিয়ে ক্যাম্পাসে হাজির হতে বাধ্য হন।

সে কারণেই ডে-কেয়ারের ভাবনা। কর্তৃপক্ষের আশা, রাখালদার ওই ক্যান্টিনে এমন একটি সেন্টার হলে সেখানে এই শিশুদের কিছুক্ষণ রেখে দেখভাল করা যাবে। চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে সিন্ডিকেটের দিকেই তাকিয়ে আছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। ক্যাম্পাসে রাখালদার স্মৃতিতে কিছু করার দাবিতে অনেক প্রাক্তনীই সরব হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম, এক সময়ের দাপুটে ছাত্রনেতা এবং বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ।

৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি পদে ছ’জনের নাম পাঠাল রাজ্য

তাঁর কথায়, ‘উপাচার্য ঠিকই বলেছেন, রাখালদার স্বভাবের মধ্যে একটা আগলে রাখার ভাব ছিল। উনি না থাকলে আমি রাজনৈতিক সংঘর্ষে মারাই যেতাম। সেই রাখালদার নামে যদি ডে-কেয়ার সেন্টার হয়, তাকে স্বাগত জানাই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ক্যান্টিনকে যদি রাখালদার ক্যান্টিন হিসেবে নামাঙ্কিত করা হয়, তা হলে আরও ভালো লাগবে।’

নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা অধ্যাপক শ্বাশতী ঘোষের সংযোজন, ‘এই ডে-কেয়ার সেন্টারটি হলে সেটা যেন নিয়মিত ব্যবহার করা হয়। অনেক জায়গাতেই এমন সেন্টার থাকে, কিন্তু তা ব্যবহারযোগ্য থাকে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *