CM Mamata Banerjee : কেউ আত্মহত্যা করলে দায় কার? প্রশ্ন মমতার – cm mamata banerjee raised questions about calcutta high court verdict from east burdwan


এই সময়: চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্ট যাওয়ার কথা ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আদালত যেভাবে সুদ সমেত এ যাবৎ বেতনের টাকা ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে, সেটা কীভাবে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা ফেরত দেবেন, তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন তৃণমূলনেত্রী।যোগ্য-অযোগ্য নির্বিশেষে আচমকা যাঁদের চাকরি চলে যাচ্ছে হাইকোর্টের নির্দেশে, তাঁদের সামাজিক সম্মান নিয়েও চিন্তিত মমতা। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে নির্বাচনী সভা থেকে হাইকোর্টের রায় নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘একটা কলমের খোঁচায় বলবে, সবার চাকরি চলে গেল। আপনার নিজের ছেলেমেয়ের চাকরি চলে গেলে ভাবতেন না? একবারও ভাববেন না, আজ যদি কোনও ছেলেমেয়ে আত্মহত্যা করে, তার দায়িত্ব আপনারা নেবেন?’

তৃণমূলনেত্রীর সংযোজন, ‘আমরা সেই কারণে বলছি, চিন্তা করবেন না। আমরা সাধ্যমতো এই কেসটা লড়াই করব। যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা আট বছর ধরে চাকরি করেছেন, তাঁদের সামাজিক সম্মানহানি হয়নি?’ হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথাতেও। উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জের নির্বাচনী সভা থেকে শাহের অভিযোগ, ১০-১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে রাজ্যে।

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে চাকরিহারাদের একাংশ এ দিন থেকে শহিদ মিনারের সামনে আন্দোলন শুরু করেছেন। একলপ্তে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যাওয়ায় স্কুলগুলো কীভাবে চলবে, তা নিয়েও এদিন প্রবল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘যাঁরা স্কুলে পড়ান কোথায় যাবেন? স্কুলে মাস্টার কোথা থেকে আসবে? স্কুলে বাচ্চারা গিয়ে বসে থাকবে, আর সেখানে বিজেপির লোকেরা গিয়ে পড়াবে? আরএসএস পড়াবে?’

অনিয়ম সংশোধন করার সুযোগ না দিয়ে একতরফা ভাবে পুরো প্যানেল বাতিল করার যৌক্তিকতা নিয়েও সরব হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। ভাতারের একটি নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলায় চাকরি দিই। আপনারা (বিজেপি তথা বিরোধীরা) কোর্টকে দিয়ে চাকরিগুলো খেয়ে নেন। ওরা তো আমাদের আন্ডারে নয়, আপনাদের আন্ডারে। আপনারা চাকরি না খেয়ে যদি বলতেন, এখানে অসুবিধা রয়েছে, এটা তোমার ভুল হয়েছে, সংশোধন করো। আমরা করে দিতাম। ভুল তো যে কেউ করে ফেলতে পারে।’

হাইকোর্টের রায়ে সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যাঁরা এই পোস্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাঁদের ভূমিকাও সিবিআইকে তদন্ত করে দেখতে বলেছে আদালত। যদিও মমতার যুক্তি, ‘সবটা কি আমি করি? আমি করি না। এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট আলাদা ডিপার্টমেন্ট। এসএসসি আলাদা আছে। প্রাইমারি বোর্ড আলাদা আছে। মাধ্যমিক বোর্ড আলাদা আছে। কলেজ কমিশন আলাদা আছে। এগুলো তাঁরা দেখেন।’

বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গত শনিবার মালদার রতুয়ার সভায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এই সপ্তাহে ‘বোমা ফাটবে’। এদিনও মমতা নাম না-করে এই ইস্যুতে শুভেন্দুকে তুলোধোনা করেছেন। ক্ষুব্ধ তৃণমূলনেত্রী এ দিন বলেন, ‘মানুষের চাকরি খেয়ে বোমা! ওই বোমা হজম হলে হয়, একদিন বুঝবি! বিজেপিতে গিয়ে দালালি করছিস কেন? খুব টাকা করেছিস বলে? যদি সিবিআই, ইডি, এনআইএ ধরে! সে দিন পুরুলিয়ার চাকরি কে বিক্রি করে দিয়েছিল? যারা টাকা দিয়েছে তারা ভয়ে মুখ খোলে না।’

‘আপনার নিজের ছেলেমেয়ের চাকরি গেলে…’ চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন মমতার

এদিকে রায়গঞ্জের প্রচারসভা থেকে অমিত শাহও হাইকোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, ‘গতকালই ৫০ হাজার (হবে প্রায় ২৬ হাজার) চাকরি বাতিল করেছে হাইকোর্ট। কেন করেছে? ১০-১৫ লক্ষ টাকা করে চাকরির জন্য ঘুষ নিত। মা-বোনেরা, আপনাদের কাছে চাকরি জোটানোর জন্য ১৫ লাখ টাকা আছে? নেই তো? তা হলে ওঁরা চাকরি পাবেন কী ভাবে?’

রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করে শাহ বলেন, ‘ওঁদের এক মন্ত্রীর ঘর থেকে ৫১ কোটি টাকা নগদ বেরিয়েছিল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় আজ জেলে বসে আছেন।’ লোকসভার পরে বাংলায় যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তা হলে এই দুর্নীতি বন্ধ হবে বলেও দাবি করেন শাহ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *