দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুয়েমারি হেরম্বগোপালপুর এসএম বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণব দোলুই বুধবার বলেন, ‘আমাকে নিয়ে স্কুলে ছ’জন পূর্ণ সময়ের শিক্ষক ছিলাম। আমাদের সবার চাকরি গিয়েছে। পড়ুয়া ৯৪৩ জন। উচ্চ মাধ্যমিকে বাংলা ও ইংরেজি ছাড়া সাতটি বিষয় আছে — ভূগোল, ইতিহাস, এডুকেশন, সংস্কৃত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন এবং পরিবেশ বিদ্যা। একজন পূর্ণসময়ের শিক্ষকও থাকবেন না।’
তাঁর সংযোজন, ‘এখন গেস্ট ও ক্যাজ়ুয়াল টিচার এবং পার্শ্বশিক্ষকরাই ভরসা। প্রধান শিক্ষক-সহ ১৯টি পদ আগে থেকেই ফাঁকা। পাঁচজন শিক্ষক আগেই উৎসশ্রীতে বদলি নিয়ে চলে গিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ না মিললে কী হবে ঈশ্বর জানেন!’ নদিয়ার শুভাবিনি গার্লস হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা রমা মণ্ডলের কথায়, ‘আমাদের দেড় হাজার ছুঁইছুঁই পড়ুয়া। ২৬ জনের বদলে মাত্র ১৩ জন শিক্ষিকা ছিলেন। তার মধ্যে এখন পাঁচজনের চাকরি বাতিলে অবস্থা সঙ্কটজনক।’
দক্ষিণ ২৪ পরগনারই দেবনগর মোকসোদা দিন্দা হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন মাইতি বলেন, ‘আমাদের আবাসিক স্কুলে ১,৭৬৯ জন পড়ুয়া। ৩৭টি অনুমোদিত শিক্ষক পদে ২০ জন শিক্ষক ছিলেন। তার মধ্যে ১২ জনেরই চাকরি বাতিল। স্কুল চলবে কী করে?’ তিনি জানান, দ্বাদশ ও দশমে ২৪১ এবং ১৬৯ জন পড়ুয়া। রেসিডেনশিয়াল স্কুলে ৯০০ জন পড়ুয়াই আবাসিক। গরমের ছুটিতেও সকাল-সন্ধ্যা ক্লাস হয়। তিনজন শিক্ষাকর্মীরও চাকরি চলে যাওয়ার কথা।
নিরঞ্জনের বক্তব্য, ‘এখন একসঙ্গে এতজনের চাকরি চলে যাওয়ার খবরে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি।’ মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরের সহকারী প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘১,৮০০ পড়ুয়ার জন্য ৩৬ জন শিক্ষক ছিলেন। সাতজনের চাকরি গেলে থাকেন ২৯ জন। আগামী ছ’মাসে আবার তিনজন অবসর নেবেন। ২৪ জন টিচারে ক্লাস চালাতে দিশাহারা অবস্থা।’
বিকাশ ভবনের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি মালদারও বহু স্কুলে চিত্রটা একই।