SSC Recruitment Scam : সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসেই সোমবার শুনানি – supreme court chief justice hearing ssc case on monday


এই সময়, কলকাতা ও দিল্লি: প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা দায়ের করেছে তার শুনানি কাল, সোমবার। এই শুনানি হবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসেই। সাম্প্রতিক অতীতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হলেও ‘মাস্টার অফ দি রোস্টার’(মামলার গুরুত্ব বুঝে নিজের কাছে রাখা) প্রধান বিচারপতি কখনও নিজের হাতে রাখেননি।কিন্তু এ বারের মামলাটি তিনি নিজেই শুনবেন বলে স্থির করেছেন। শীর্ষ আদালতের আইনজীবীদের একাংশ এই নিয়োগ বাতিলের মামলা অন্য বেঞ্চে না পাঠিয়ে প্রধান বিচারপতির নিজের হাতে রাখার সিদ্ধান্তকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ, এক লপ্তে এতজন শিক্ষক-কর্মীর নিয়োগ বাতিলের নজির সাম্প্রতিক কালে নেই। আর এই নিয়োগ বিতর্ক নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল ও ডিভিশন বেঞ্চ এবং সুপ্রিম কোর্টে প্রায় তিন বছর ধরে মামলা চলছে।

ইতিমধ্যেই মামলাকারী তিনপক্ষ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদির ২৮২ পাতার রায়ের নানা অনুচ্ছেদে পরস্পর বিরোধিতার উল্লেখ করেই সর্বোচ্চ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দায়ের করেছে। এই আইনি লড়াইয়ের জন্য মামলাকারীদের তরফ থেকে তুলে ধরা হচ্ছে একাধিক যুক্তি।

ওএমআর স্বীকৃত, অথচ প্যানেল বাতিল
গাজিয়াবাদ থেকে সিবিআইয়ের উদ্ধার করা ওএমআর সংক্রান্ত হার্ডডিস্ককে স্বীকৃতি দিয়েছে আদালত। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা হাইকোর্টের সিঙ্গেল ও ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে তদন্তও করেছে। এর ভিত্তিতেই রাজ্যের মন্ত্রী, এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, সহসচিব ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি সহ একাধিক প্রভাবশালীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ করা হয়েছে। এমনকী, সিবিআই, মামলাকারীদের আইনজীবী এবং এসএসসি’র কর্তাদের উপস্থিতিতে অযোগ্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ওএমআর সিট এসএসসির ওয়েবসাইটেও আপলোডের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এরপরেও আদালত সকলের নিয়োগ বাতিল করেছে।

আবার একই সঙ্গে সিবিআইকে চারটি মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা সত্ত্বেও কেন পুরো প্যানেল বাতিল করা হয়েছে?

সব পক্ষের বক্তব্য শোনা
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ওএমআর জালিয়াতিতে নম্বর বাড়ানো চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য না শুনেই সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁদের একাংশকে অযোগ্য বলে রায় দিয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করলে, সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা চাকরি বাতিলের আগে অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনার নির্দেশ দেন।

কিন্তু আদালত তাঁদের বক্তব্য শুনলেও পুরো প্যানেল বাতিলের আগে তথাকথিত ‘যোগ্য’দের বক্তব্যই শোনেনি। যদিও ডিআই’রা আদালতের কথা উল্লেখ করে যোগ্যদের উদ্দেশে নোটিস জারি করেছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রে প্যানেলে তথাকথিত ১৯-২০ হাজার যোগ্যর বক্তব্য না শুনেই নামকে ওয়াস্তে নোটিসের মাধ্যমে কী করে এতজনের চাকরি বাতিলের রায় দেওয়া হলো?

সংবিধানের ধারা নিয়ে প্রশ্ন
আদালত বলেছে, ধারা ২১-র এ অনুযায়ী, অযোগ্যরা স্কুলে পড়ালে, শিক্ষার্থীরা ভুল শিখবে। তাতে আখেরে ক্ষতি হবে। অথচ সংবিধানের ধারা ২১ অনুযায়ী, রাইট টু লাইফের কথা বলা হয়েছে। ফলে, যাঁরা এসএসসি-র মাধ্যমে ১৯৯৮-২০১২ থেকে চাকরি পেয়েছেন, বা অন্য চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় পাশ করে এসেছেন, তাঁদের জীবনের অধিকারের কী হবে?

পর্ষদের বক্তব্য, এক সঙ্গে এতজন শিক্ষক-কর্মীর চাকরি বাতিলে স্কুলশিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পড়াশোনাও চরম ব্যাহত হবে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তাহলে সংবিধানের ধারাকে কি অমান্য করা হয়নি?
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে SSC মামলার শুনানির সম্ভাবনা

মিরর ইমেজ প্রামাণ্য নথি
নিয়ম মেনে এসএসসি ২০১৬ সালের পরীক্ষার এক বছর পরে প্রকৃত ওএমআর নষ্ট করে দেয়। যদিও গাজিয়াবাদ থেকে সিবিআই সেগুলির স্ক্যান কপি উদ্ধার করে। সিবিআইয়ের উদ্ধার করা ওই স্ক্যান কপি নিয়েও প্রশ্ন ওঠায় সুপ্রিম কোর্ট তা আইনগত ভাবে প্রামাণ্য নথি হিসেবে গ্রহণযোগ্য কিনা, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের স্পেশাল ডিভিশন বেঞ্চকে।

অভিযোগ, সিবিআইয়ের সেই স্ক্যান-ওএমআর কপি যাচাইয়ের ফরেন্সিক রিপোর্ট আদালতে জমাই পড়েনি। কারণ, সিএফএসএল স্ক্যানের হার্ডডিস্ক খুলতে না পারায় সেগুলি পরীক্ষা না করেই ফেরত পাঠিয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে এগুলো নথি হিসেবে কি আদৌ গ্রাহ্য হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর অমীমাংসিত থেকে যায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *