Life After Death: মারা যাওয়ার ঠিক পরেই আপনার শরীরে যা যা হবে…


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সাধারণভাবে আমজনতা মৃত্যু বলতে যা বোঝেন তা হল দেহ ছেড়ে পরলোকে যাত্রা। শরীর থেকে আত্মা পৃথক হয়ে যাওয়া। শরীরের সব কাজকর্ম থেমে যাওয়া আর নশ্বর দেহ বিলীন হয়ে যাওয়া। এখন দেখা যায় মৃত্যুর পর দেহের কী পরিণতি হয়।

অক্সিজেন সরবারহ থেমে যাওয়ায় মস্তিস্কের কার্যকর্ম থেমে যায়। এর পরও দেহের কাজকর্ম কয়েক মিনিট চলতে পারে। সেটা চলতে পারে এটিপির দ্বারা। এই এটিপি শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে কিছু কাজ। এরপর দেহের রক্তজালিকগুলিতে রক্ত পৌঁছয় না। গোটা দেহে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।

আরও পড়ুন-প্রচারের মধ্যেই বড়সড় দুর্ঘটনায় বিজেপি প্রার্থী, ভাঙল পাঁজরের হাড়-কলারবোন!

নেয়ার ডেথ এক্সপেরিমেন্ট বলে একটি বিষয় আছে। এটি হল যেই মুহূর্তে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায় তখন এন্ডারোফিন নামে একটি তরল গোটা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। দেহের তাপমাত্রা দ্রুত কমতে থাকে। মৃত্যু পরবর্তী মুহূর্তে দেহের তাপমাত্রা নিচে নেমে যাওয়াকে বলা হয় অ্যালগর মর্টিস। প্রতি ঘণ্টায় ১.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট করে তাপমাত্রা কমতে থাকে। কমতে কমতে একসময় কক্ষতাপমাত্রার সমান হয়ে যায়। তিন থেকে সাত মিনিটের মধ্য়ে মস্তিস্কে জমা থাকা অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। তখনই কোষগুলোর মৃত্যু হতে শুরু করে। ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচার জন্য আমাদের দেহ সাধারণতা অ্যাসিডিক হয়ে থাকে। কোষের মৃত্যুর পর তা কমে যায়। তার পর জীবানু কাজ করতে শুরু করে।

দেহের মাঝে কিছু অতি ক্ষুদ্র প্রাণী অনেকক্ষণ বেঁচে থাকে, যা দেহকে পচাতে আরম্ভ করে। অন্ত্রের মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া, যেগুলো জীবিত অবস্থায় খাদ্যসার শোষণে আমাদের সাহায্য করে এসেছে তারা কাজ শুরু করে। অন্ত্রে থাকে ১০০ ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া। অবায়বীয় মানে হল, যাদের বাঁচতে কোনো অক্সিজেন প্রয়োজন হয় না। তারাই অন্ত্রীয় বিশাল অংশকে দ্রুত ভক্ষণ করতে শুরু করে। অন্ত্রের অ্যামিনো এসিডকে পচিয়ে ব্যাকটেরিয়াগুলো দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে। ব্যাকটেরিয়ার পচানোর কাজটাকে বলা হয় Putrefying। দুর্গন্ধটাই আবার কিছু অতিক্ষুদ্র পরজীবী কীটকে আকর্ষণ করে। এরা এসে পচে যাওয়া টিস্যুতে ডিম পাড়ে। একদিনের মধ্যেই ওই ডিমগুলো ফেটে বেরিয়ে আসে লার্ভা। পচে যাওয়া টিস্যুর অংশবিশেষ ভক্ষণ করেই বাড়তে শুরু করে লার্ভাগুলো। এক সপ্তাহের মধ্যেই এই কীটগুলো শরীরের অর্ধেকেরও বেশি অংশ সাবাড় করে ফেলে।

মৃত্যুর ৫০ দিনের মাথায় শুরু হয় আরেকটি প্রক্রিয়া, এর নাম ‘বিউটাইরিক ফার্মেন্টেশন’। এটি প্রোটোজোয়া জাতীয় প্রাণীকে আকর্ষণ করে। কখনো কখনো ছত্রাককেও আকর্ষিত হতে দেখা যায়। তাদের ভক্ষণ পদ্ধতি বেশ দ্রুত, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভক্ষণকার্য আরও বেড়ে যায়। আর বছরের শেষ মাথায় মৃতজীবী প্রাণী আর উদ্ভিদ তো আছেই। তারাও খেতে শুরু করে যা অবশিষ্ট থাকে।

পাকস্থলীর নিচে, ডিওডেনামের ভাঁজে থাকে ‘অগ্ন্যাশয়’। এই অংশে এত সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া থাকে যে, মৃত্যুর পর এটি নিজেকেই নিজে নষ্ট করে ফেলে। আস্তে আস্তে ব্যাকটেরিয়াগুলো দেহের অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে। দেহের রং তখনই পাল্টাতে শুরু করে। সম্পূর্ণরূপে রং বদল প্রক্রিয়া বারো ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে থাকে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এই রং বদলের ক্রিয়া লক্ষ্য করেই মৃত্যুর সময় নির্ণয় করে থাকেন। পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়াগুলো চলে আসে ত্বকীয় কোষে, দেহ দ্রুত সবুজ রং ধারণ করতে শুরু করে, হিমোগ্লোবিন থেকেই এই সবুজ রং হয়।

শরীরের ভেতর Putrefication এর দরুন গ্যাস তৈরি হয়, মৃতদেহ জলে ফেলা হলে এজন্যেই ভেসে উঠে। এই গ্যাসের কারণেই শরীর ফেঁপে উঠে। এক সপ্তাহ পর, ত্বকীয় কোষগুলো দৃঢ়তা হারিয়ে এতটাই চুপসে যায় যে, হাত দিয়ে একটু স্পর্শ করলেই ছিঁড়ে পড়ে যাবে।

মৃত্যুর পর দেহে রক্ত চলাচল থেমে যায়। অক্সিজেন না পেয়ে কোষগুলো মরে যেতে থাকে। তার পরেই দেহ শক্ত হয়ে যায়। একে বলে রাইগার মর্টিস। এরপর ধীরে ধীরে ল্যাকটিক অ্যাসিড ও মায়োসিস প্রোটিনের সহায়তায় একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ফলে দেহের দৃড়তা ভেঙে পড়ে। এক সপ্তাহের মধ্য়ে দেহে ফোসকার মতো জিনিস তৈরি হয়। এক মাসের মধ্যে নখ, দাঁত, চুল আলাদা হয়ে যেতে শুরু করে। দেহের টিস্যুগুলি গলে যায়। দেহে তরলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে তা ত্বক ভেদ করে বেরিয়ে আসতে থাকে। তখন পড়ে থাকে শুধুই কঙ্কাল। এরপর যা রয়ে যায় তা হল মানুষের কৃতকর্ম।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *