তারিকের কথায়, ‘ইমরানের মা স্থানীয় একটি হস্টেলে পরিচারিকার কাজ করেন। বাবা বৃদ্ধ। মায়ের রোজগারের টাকাতেই কোনওমতে সংসার চলত। আন্দোলনের ফাঁকে যেটুকু সময় পেত, তখনই কলকাতায় কিছু প্রাইভেট টিউশন করত ইমরান। ও শুধু নিজের কথা ভেবে আন্দোলনটা শুরু করেনি। লক্ষ লক্ষ বেকারের চাকরির দাবিতে পথে নেমে আন্দোলন করেছিল। সেই আন্দোলন আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।’
আর এক সহযোগী আন্দোলনকারী আনন্দ মল্লিক বলেন, ‘আন্দোলনের সূত্রে পথেই আমাদের পরিচয়, বন্ধুত্ব। রান্না করে আনা খাবার একসঙ্গে খাওয়া। ৪ এপ্রিলও ইমরানের নেতৃত্বে নিয়োগ পরীক্ষার দাবিতে কালীঘাট অভিযান করলাম আমরা। পুলিশ ওকে ধরে নিয়ে গেল। ভাবতেই পারছি না যে ও আর নেই।’ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাস্টার্স করেছিলেন ইমরান। মেধাবী ছাত্র হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।
মূলত যে সব দাবির জন্য ইমরানদের লড়াই, তার অন্যতম হলো — প্রতি বছর এসএসসি-পরীক্ষার নোটিফিকেশন, স্বচ্ছ ভাবে শিক্ষক নিয়োগ ইত্যাদি। একদিকে শিক্ষিত বেকারদের চাকরির নিশ্চয়তা, অন্যদিকে স্কুলে স্কুলে শিক্ষকের অভাব পূরণের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন ইমরান। তাঁদের আন্দোলনের মধ্যেই ২০২২-এর ৫ মে এসএসসি-র তরফে একটি নোটিফিকেশনে জানানো হয়, শীঘ্রই নিয়োগ-পরীক্ষা হবে। তারপর অবশ্য দু’বছর কেটে গিয়েছে। বিজ্ঞপ্তি বাস্তবায়িত হয়নি এখনও। গত বছর এই ৫ মে-ই ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে ইমরানের নেতৃত্বে কেক কেটে প্রতিবাদ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। আর বছর ঘুরে ঘটনাচক্রে সেই মে মাসের ৫ তারিখেই মারা গেলেন তরুণ।