বুধবার রেজাল্ট ঘোষণার সময়ে বাবা, মা ও দাদার সঙ্গে মাঠে কৃষিকাজে ব্যস্ত ছিল জ্যোৎস্না। কেটে রাখা বোরোধান মাঠ থেকে তুলে বাড়ি আনার কাজ করছিলেন তাঁরা। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে মোবাইলে সাফল্যের খবর পেয়ে স্কুলে চলে আসে জ্যোৎস্না। বলে, ‘সাঁওতালি আমাদের মাতৃভাষা। আগামী দিনে সাঁওতালি নিয়ে পড়াশোনা করে এই ভাষার শিক্ষিকা হতে চাই।’ কষ্টের সংসারেও ছেলে-মেয়ে দু’জনকেই শিক্ষিত করে তোলার স্বপ্ন রয়েছে কিস্কু দম্পতির।
পড়াশোনায় সুনাম রয়েছে রাইপুরের পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়ের। পঠনপাঠনে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি যত্নবান স্কুলের শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘জ্যোৎস্নার এই সাফল্যে আমরা খুব আনন্দিত। শুধু এ বছরেই নয়, বিগত দিনেও আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে।’
এদিন যখন ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল তখন জ্যোৎস্না মা বাবার সাথে মাঠে ধান কাটতে গিয়েছিলেন। দাদা, খবর জেনে মাঠে ছুটে গিয়ে মা বাবা এবং বোনকে খবর দিলে কাস্তে হাতে মা, বাবা, দাদা, বোন ,চোখের জলে এই আনন্দ উপভোগ করেন। জ্যোৎস্না জানান, আমরা এতটাই গরীব বাবা একদিন দিনমজুরির কাজে না গেলে আমাদের সংসার চালানো খুব জটিল হয়ে যায়। মা-বাবা যদি আমাকে পড়াতে চান তাহলে ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বাবা শুকদেব কিস্কি এবং মা শর্মিলা দেবী জানালেন, মেয়ে যতদূর পড়তে চায় প্রাণপণ চেষ্টা করব ওর ইচ্ছে পূরণ করতে। সেই সাথে জানালেন পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা অমাইক গরিব দরদী না হলে আমার মেয়ে কোনদিন এই ফল করতে পারত না।