Alipurduar Incident : দুষ্কৃতীদের কামড়ে-লাথি মেরে ডাকাতি রুখে দিলেন গৃহকর্ত্রী – alipurduar housewife stops robbery by biting and kicking miscreants


এই সময়, আলিপুরদুয়ার: এক লাথিতে কুপোকাত ডাকাতদল! শেষমেষ রণে ভঙ্গ দিয়ে বাঁচল তারা। যার কেরামতিতে বড়সড় ডাকাতির প্ল্যান পণ্ড, তিনি সেই বাড়িরই মধ্যবয়সী গৃহকর্ত্রী। স্রেফ কামড় আর লাথি মেরেই ডাকাতদের মোকাবিলা করে ফেলেছেন তিনি। শনিবার ভোররাতে ঘটনাটি ঘটে আলিপুরদুয়ারের পলাশবাড়ি বাজার চত্বরে।এলাকার সম্ভ্রান্ত প্লাইউড ব্যবসায়ী বাবু ভুঁইয়ার বাড়িতে ওই ডাকাতির ঘটনায় আলোড়ন তৈরি হয়েছে। খোয়া গিয়েছে নগদ পাঁচ হাজার টাকা, দু’টি মোবাইল ও নকল সোনার চেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সোনাপুর ফাঁড়ির পুলিশ। ডাকাতি রুখে আতঙ্কে খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবু ভুঁইয়ার স্ত্রী কল্পনা ভুঁইয়া।

কল্পনার বয়ান অনুসারে, তখন আনুমানিক ভোর তিনটে বেজে পঁচিশ মিনিট। আচমকা ঘুম ভেঙে যায় কল্পনার। অন্ধকারেই তাঁর চোখে পড়ে ঘরের মধ্যে দুই ছায়ামূর্তির আনাগোনা। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক জন তাঁর মুখ চেপে ধরে। আসলে বাড়ির দেওয়াল টপকে ভিতরে ঢুকেছিল পাঁচ জনের একটি ডাকাতদল। বাড়ির মূল দরজা ভেঙে ফেলে তাঁরা। বাড়ির ভিতরে একটা প্যাসেজের দু’ধারে পরপর একাধিক ঘর ভুঁইয়া পরিবারের সদস্যদের।

সব ক’টি ঘরে বাইরে থেকে ছিটকিনি এঁটে দেয় দুষ্কৃতীরা। একদম শেষের ঘরটি গৃহকর্ত্রী কল্পনার। সেখানেই প্রথমে ঢোকে দুই ডাকাত। তখনই ঘুম ভেঙে যায় কল্পনার। তাঁর মুখ চেপে ধরে আলমারির চাবি চায় দুষ্কৃতীরা। প্রাণপণ চিৎকার করার চেষ্টা করেন কল্পনা। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা তা শুনতে পাননি। এক সময়ে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে না পেরে আলমারির চাবি দিয়ে দিতে বাধ্য হন কল্পনা। এক জন আলমারি খুলে লুটপাট শুরু করে। সেখানে হাজার পাঁচেক টাকা ছিল।

এছাড়া কল্পনার গলায় ইমিটেশনের চেন ছিল। সেটা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। আর নেয় মোবাইল। এর পর বাকি ঘরগুলিতে হানা দেওয়ার প্ল্যান ছিল তাঁদের। এরই মাঝে এক ডাকাত কল্পনার মুখে বালিশ চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া কল্পনা জোরে কামড় বসান ওই দুষ্কৃতীর হাতে। ঘাবড়ে গিয়ে সে যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে। তার সেই দুর্বলতার সুযোগ নেন কল্পনা। উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঝেড়ে এক লাথি মারেন ওই দুষ্কৃতীর পুরুষাঙ্গে। তাতেই মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি বদলে যায়।

মেঝেয় আছড়ে পড়ে সেই দুষ্কৃতী কাতরাতে শুরু করে। তাকে দেখে বেশ ভয় পেয়ে যায় দলের বাকিরা। এর পরে বেগতিক বুঝে পিঠটান দেয় গোটা ডাকাতদলটিই। ওরা চলে যেতেই সাহসে ভর করে কল্পনা বাড়ির সব ঘরের ছিটকিনি খুলে দেন। খবর ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। ততক্ষণে অবশ্য এলাকা ছেড়ে পগারপার ডাকাত দল।
কল্পনা বলেন, ‘সবার মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল। তাই কাউকেই চিনতে পারিনি। তবে প্রাথমিক ভাবে ঘাবড়ে গেলেও, আমি হাল ছাড়িনি। পরিবার ও নিজেকে বাঁচাতে কামড় ও লাথি মারা ছাড়া আমার আর কোনও পথ ছিলো না।’

তাঁর স্বামী বাবু ভুঁইয়া বলেন, ‘ঘরে বন্দি হয়ে থাকায় বাইরে যে এত কিছু ঘটে গিয়েছে, কিছুই ঠাহর করতে পারিনি। স্ত্রীর চিৎকারে শুনেছিলাম। ছিটকিনি খোলার পর যতক্ষণে বাইরে আসি, ততক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছিল। স্ত্রীর উপস্থিত বুদ্ধি ও সাহসের জন্য আমরা সবাই রক্ষা পেয়েছি।’ ওই পরিবারের মেয়ে মলি বলেন, ‘ঘটনার জেরে মায়ের ঘোর কাটছে না। মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’ জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী বলেন, ‘ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *