বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র,বনগাঁয় BJP-র বাজি শান্তনুই, টক্কর দিতে তৃণমূলের যোদ্ধা বিশ্বজিৎ, মতুয়া মন কোন দিকে? – bangaon lok sabha election main fight between shantanu thakur and biswajit das


বাম আমল থেকেই বিভিন্ন সময় বঙ্গ রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন তারা। পরবর্তীতে রাজ্যে পালাবদল হলেও সেই পরম্পরায় কোনও পরিবর্তন আসেনি। ভোট বাক্সে তাদের সমর্থন পেতে চেষ্টার ত্রুটি রাখে না শাসক-বিরোধী কোনও পক্ষই। বিশেষত উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার একটা বিস্তীর্ণ অংশে তাদের বাস, তারা মতুয়া। এই মতুয়ারা হলেন সনাতন হিন্দুধর্মের একটি বিশেষ সম্প্রদায়। মতুয়া শব্দের উৎপত্তি বা অর্থ বলতে বোঝায় ‘মেতে থাকা’ বা ‘মাতোয়ারা’। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর ঠাকুরবাড়িকে কেন্দ্র করেই মূলত মতুয়াদের ধর্মাচার। আর শুধু ধর্মাচারই নয়, যে কোনও নির্বাচনে বনগাঁ এলাকায় প্রার্থীদের কার্যত ভাগ্য নির্ধারকও এই মতুয়ারাই।

শান্তনুতেই ভরসা বিজেপির

যখন যে দল সরকরে থেকেছে, তখন তারই চেষ্টা করেছে মতুয়াদের সমর্থন পেতে। সময়ের সঙ্গে অবশ্য ঠাকুর পরিবারের সদস্যরা রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছেন। এবারের লোকসভা ভোটেরও যার ব্যতিক্রম নেই। বনগাঁ লোকসভা আসনে এবার ফের একবার বিজেপির হয়ে নির্বাচনী লড়াইতে রয়েছেন ওই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। আর তাঁর বিপক্ষে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। ওই কেন্দ্রে আবার বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হলেন প্রদীপ বিশ্বাস। গত লোকসভা নির্বাচনে ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬২২ ভোট পেয়ে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন শান্তনু। পরবর্তীতে তাঁকে মন্ত্রীও করে কেন্দ্রীয় সরকার। এবারে ফের একবার তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছে গেরুয়া শিবির।

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল

লোকসভা নির্বাচনের পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও কার্যতও ওই এলাকার মানুষের ঢালাও সমর্থন রায় বিজেপি। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা কেন্দ্রগুলি হল কল্যাণী, হরিণঘাটা, বাগদা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ, গাইঘাটা ও স্বরূপনগর। ২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শুধুমাত্র স্বরূপনগর ছাড়া বাকি সবক’টি কেন্দ্রেই জয় পায় বিজেপি। তবে বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে জিতে পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগ দেন বিশ্বজিৎ দাস। আর সেই বিশ্বজিৎ দাসের হাতেই এবার নির্বাচনী লড়াইয়ের ব্যাটন তুলে দিয়েছে তৃণমূল।

ভোটের আগে CAA লাগু

গত লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির তরফে দেশে সিএএ আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আর এবারে লোকসভা ভোট ঘোষণার কয়েকদিন আগে বাস্তবিকই দেশে সিএএ লাগু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর সিএএ লাগু হতেই মতুয়া সম্প্রদায়ের একটা অংশের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা দেয়। বলতে গেলে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয় তাঁদের। ফলে রাজনৈতিকমহলের কেউ কেউ মনে করছেন এর প্রভাব পড়তে পারে ভোটের বাক্সে। যদিও তৃণমূল অবশ্য প্রথম থেকেই এই সিএএ-র বিরোধিতা করে আসছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, তৃণমূল-বিজেপির দ্বৈরথে কার্যত আড়াআড়িভাবে ফাটল দেখা দিয়েছে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলেও।

একদিকে যখন মতুয়া সম্প্রদায়ে বিজেপির মুখ হয়ে উঠেছেন শান্তনু ঠাকুর, অন্যদিকে আবার পরিবারেরই অপর এক সদস্য মমতাবালা ঠাকুরকে রাজ্যসভার জন্য বেছে নিয়েছে তৃণমূল। আবার কেউ কেউ বলেন, মতুয়া সমাজে বিশ্বজিতের জনপ্রিয়তাও খুব একটা কম নয়। সেক্ষেত্রে দেখার, এবারের নির্বাচনে কাদের নিয়ে ‘মাতোয়ারা’ হয় মতুয়া মন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *