Kolkata Municipal Corporation: ডেলিভারির কাজে চাই ব্যাটারি কার, সাইকেল – kolkata municipal corporation takes initiative to reduce air pollution by using battery vehicle on online delivery


শ্যামগোপাল রায়
দিন দিন বাড়ছে অনলাইনে ডেলিভারি। সব্জি, মুদিখানা সামগ্রী থেকে রান্না-খাবার–ঘরে বসে মোবাইলে অর্ডার দিয়ে আনিয়ে নিচ্ছেন মানুষজন। কোভিডের সময় থেকেই অনলাইন ডেলিভারি সংস্থাগুলির রমরমা ক্রমে বেড়ে চলেছে। এর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণ। বিশেষত বায়ু-দূষণ। বেশিরভাগ ডেলিভারি পার্সনেরই বাহন যেহেতু মোটরবাইক, তা থেকে বাতাসে কার্বন-ডাই অক্সাইড মেশার পরিমাণও বেড়ে চলেছে ক্রমাগত।দেশজুড়েই এ নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে একাধিক সংস্থা। সেই সমীক্ষার রিপোর্টে অনলাইন ডেলিভারির জেরে দূষণে দেশের মধ্যে তিন নম্বরে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতা। এই অবস্থায় দূষণ কমাতে পরিকল্পনা করছে পুরসভা। ডেলিভারি সংস্থাগুলি যাতে পরিবেশবান্ধব যানবাহনে জোর দেয়–সে প্রস্তাবই তাদের দিতে চলেছে পুরসভা। বিভিন্ন ডেলিভারি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে আগামী মাসে বৈঠকে বসতে চলেছেন পুরকর্তারা। বৈঠকে পরিবহণ দপ্তর এবং পরিবেশ দপ্তরের প্রতিনিধিরাও হাজির থাকবেন।

সমীক্ষায় প্রকাশ, ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে জিনিসপত্র ডেলিভারির কাজে সংস্থাগুলি মূলত মোটরবাইক ব্যবহার করে। চারচাকা গাড়ির তুলনায় বাইকে ১২ শতাংশ বেশি কার্বন-ডাই অক্সাইড মেশে বাতাসে। সমীক্ষাকারী সংস্থা কলকাতা পুরসভার কাছে দূষণ মোকাবিলায় বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশই অনলাইনে জিনিস সরবরাহকারী সংস্থাগুলির কাছে রাখতে চাইছে পুরসভা।

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ডেলিভারিতে সাইকেল ব্যবহার করা হোক। ৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে ব্যাটারি-চালিত গাড়ি। এ জন্যে সংস্থাগুলি ডেলিভারি পার্সনদের আর্থিক সাহায্য করুক–এমন অনুরোধও করা হবে পুরসভার তরফে। যে সব সামগ্রী ড্রোনে পৌঁছনো সম্ভব, সেখানে ড্রোন ব্যবহারেরই সুপারিশ করা হবে।

তবে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তর প্রশ্ন, কলকাতায় যে সংখ্যক মোটরবাইক চলে তা সবই অনলাইন ডেলিভারি-কর্মীদের, এমন তো নয়। তা হলে শুধু ওঁদের কেন পরিবেশবান্ধব যান ব্যবহারের কথা বলা হবে!’ পুরসভার পরিবেশ বিভাগের কর্মীদের অবশ্য যুক্তি, শহরে পরিবেশবান্ধব বাইকই যাতে মানুষ কেনেন, সে জন্যে পরিবহণ দপ্তর থেকে ট্যাক্সে ছাড় দেওয়া হয়। এখন অনেকেই পরিবেশবান্ধব গাড়ি-বাইকই কিনছেন।

অন্য দিকে, অনলাইনে খাবার ডেলিভারির সঙ্গে যুক্ত কসবার কালীপদ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘আমাদের সময়ের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। সময়ে না পৌঁছলে রেটিং ঠিকঠাক মেলে না। যার প্রভাব পড়ে উপার্জনে। সে কারণেই এই পেশায় সাইকেলের তুলনায় বাইকের কদর বেশি।’ ফলে পুরসভার উদ্যোগ কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।

পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী মনে করেন, ‘একদিনে সবটা বদলানো সম্ভব নয়। তবে অনলাইনে জিনিস সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন পরিবেশবান্ধব যান ব্যবহার করলে শহরে বায়ু-দূষণের মাত্রা অনেকটা কমবে। মেন রাখতে হবে, এক লিটার তেল পোড়ার ফলে বাতাসে ২.৫ কেজি কার্বন-ডাই অক্সাইড মেশে।’ পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দারের বক্তব্য, ‘অনলাইনে জিনিস সরবরাহকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে আগামী মাসেই বৈঠক হবে। সংস্থাগুলির ৫০ শতাংশ কর্মী যদি পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহার করেন, তা হলেও দূষণ অনেকটাই কমবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *