Rachna Banerjee: গরিবের সঙ্গে ঘুগনি খেয়ে ট্রোলড হলেও সমস্যা নেই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের – hooghly tmc candidate rachana banerjee says she has no problem being trolled for eating ghugni in lok sabha election campaign


ভাস্বতী ঘোষ
ব্রেকফাস্টে দইয়ের মধ্যে বিভিন্ন সিড। সঙ্গে তরমুজ, ড্রাগন ফ্রুটের টুকরো। হুগলিতে মুইদিপুর মাইতিপাড়া থেকে বোসো পৌঁছে জনসংযোগ করার কথা ছিল অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মাঝে ধনিয়াখালি বাজারে নামলেন তিনি। কলকাতা শহরের বহুতল থেকে বেরনোর পর লোকসভা নির্বাচনে হুগলির তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী গাড়িতে প্রায় নাকে-মুখে গুঁজে ব্রেকফাস্ট সারলেন। প্রতি মিনিটে ফোন বাজছে।দই ছাড়া কি রচনার চলছে না? অভিনেত্রী হেসে বললেন, ‘দই ছাড়া আমার জীবন চলে না। তাতে লোকে মিম বানাক বা হাসুক। যাঁরা মিম বানান বা কটু কথা বলেন, তাঁরা কিন্তু বাড়িতে দুপুরবেলা দই খান! যা-ই হোক, ওদের লাইক-সাবস্ক্রাইবার দরকার।’ গাড়িতে যেতে-যেতে একটা-দুটো মিম দেখলেন রচনা। তিনি মিম উপভোগ করেন, কিন্তু কমেন্টগুলো পড়েন না। নায়িকার দাবি, রাজনীতিতে তাঁর বিরোধী পক্ষরাই মিমগুলো বানাচ্ছেন।

নির্বাচনে লড়ার টিকিট পেতে উৎসুক হয়ে থাকেন টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কেউ কেউ। প্রস্তাব পাওয়ার পর রচনার ঠোঁটের ডগায় কিন্তু ‘হ্যাঁ’ ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় তাঁকে ভরসা জুগিয়েছেন। এখন মুখ্যমন্ত্রী টিপস দিচ্ছেন? ‘দিদি এত ব্যস্ত, আলাদা করে টিপস দেননি। তবে মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে বলেছেন’, বক্তব্য রচনা। তাঁর প্রতিপক্ষ গেরুয়া শিবিরের লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারাতে পারবেন?

‘হুগলি জেলা এখন হট সিট, সবাই তাকিয়ে আছে’ মন্তব্য রচনার

রচনার উত্তর, ‘এ সব করছি জিতব বলেই। মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই। আমি আশাবাদী।’ শহর থেকে হুগলিতে যাওয়ার পথে একটা কফি-শপে অল্প সময় দাঁড়িয়েছিলেন রচনা। সেখানেও ছবি শিকারীরা ভিড় করলেন মুহূর্তে। বছরভর স্টেজ শো করার সময়ে যতটা ভিড় সামলাতে হয় তাঁর বাউন্সারদের, প্রচারে তার চেয়ে ভিড় কিছু কম নয়। ধনিয়াখালি বাজারে পৌঁছে রোড-শো শুরু করার পর ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর সঞ্চালককে একটিবার চোখের সামনে দেখার জন্য উতলা হোমমেকাররা।

হুগলির দই, ঘুগনি, আলুর দম যা-ই খান রচনা, তাঁর চোখেমুখে বিস্ময়। এ দিন প্রচারের ফাঁকে লেবুর শরবত এগিয়ে দিলেন একজন মহিলা। তিনি সেলফির আবদার করলেন অভিনেত্রীর কাছে। পরমুহূর্তে রচনার ধমক, ‘আপনি আবার সেলফি তুলবেন বলে টাইমার দিয়েছেন? দেখো কাণ্ড!’ এমন প্রচারপর্বের অংশ হলে মনে হয় এই বাংলায় প্রার্থী কোন অস্ত্রে ভোট পান? দেশের শিক্ষা, শিল্পে কীসে উন্নতি ঘটবে তার মানচিত্র তুলে ধরতে পারলে? নাকি যত সেলফি, তত ভোট?

রচনার প্রচারে তাঁর ছেলে আসেননি। তবে বর প্রবাল বসুকে দেখতে পাওয়া গিয়েছে। বর-বউ এক বাড়িতে থাকলে ঝগড়া হয়। তাই আলাদা থাকেন। যদিও একজন-অন্যজনের পাশে সব সময়ে থাকার অঙ্গীকার করেছেন তাঁরা। তাই ভোটে লড়ার দিনগুলোতে বর নায়িকার ভরসা হয়েছেন নতুন করে। রচনা হুগলিতে কোন দিন কী খাবেন, এটাই যেন জানার বিষয়।

আর কোন খাবার চেখে দেখতে চান? প্রশ্নটা শুনে রচনা বলছেন, ‘গ্রামের মানুষরা দাঁড়িয়ে ঘুগনি খাচ্ছিলেন। আমার মনে হয়েছিল, যদি শুধু হাত নেড়ে চলে যাই, ওঁদের মনে হবে, রচনা কলকাতা থেকে এসেছেন। বড় মানুষ। উনি আমাদের সঙ্গে ঘুগনি খাবেন না। একজন গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ঘুগনি খাওয়ার জন্য ট্রোলড হলে আমি সেটা নিয়ে গর্বিত।’

Rachana Banerjee : ‘কতদিন পর রেলের টিকিট দেখলাম’, ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেনে হঠাৎ রচনা
ধনিয়াখালি বাজারে যাওয়ার আগে একটা স্কুলে নেমে স্থানীয়দের সঙ্গে নাচে মেতে উঠলেন রচনা। নায়িকা বলে কথা! তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ গেরুয়া শিবিরের লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক সময়ে দারুণ সখ্য ছিল নায়িকার। দু’জনকে একান্তে গল্প করার সুযোগ দিলে খুব হাসাহাসি করবেন তো? রচনা তাঁর ভাইরাল হাসি হেসে বললেন, ‘একদম। ওঁকে জিজ্ঞাসা করব। কেন রাজনীতিতে এল?’

রচনার প্রিয়জনরা একই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন হয়তো। রাজনীতিতে না-এলে রচনা কি এত নেগেটিভ মন্তব্যের মুখে পড়তেন? ‘রাজনীতির মানুষদের কথা বাদ রাখছি। আমার যাঁরা কলিগ, যাঁদের পরিবার মনে করি, তাঁরা যখন আমাকে বা অন্য আর্টিস্টদের নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেন, তখন খুব খারাপ লাগে। তাঁদের নাম বলতে চাই না। সকলে জানেন তাঁরা কারা’, বলছেন রচনা।

শিল্পের ধোঁয়া দেখাতে গিয়ে যিনি ট্রোলড, জিতলে শিল্পক্ষেত্রে কী ভাবে এগিয়ে দেবেন তাঁর এলাকাকে? রচনা উপলব্ধি, সেটা তাঁর আয়ত্তের বাইরে। রাজ্য সরকার প্ল্যান করবে। যদি রচনা জেতেন, তাঁর লোকসভা এলাকায় সাতটা অফিস করতে চান। আবেগপ্রবণ হয়ে নায়িকা বললেন, ‘আমার কাছে মহিলারা এসে শুধু কি কল আর জল নিয়ে কথা বলবেন? তা নয়। একজন মানুষকে দরকার হয়, যে কষ্টের কথা শুনতে পারে। পরামর্শ দিতে পারে। আমি মহিলাদের সেই কথাগুলো শুনব। কিন্তু হুগলির বাইরে যাঁরা আছেন, তাঁরা কী ভাবে আমাকে পাবেন? তাঁদের জন্যই ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ রইল।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *