পরনে আটপৌরে সুতির শাড়ি। বেনি বাঁধা চুল। গলায় কোমরে মালা। পুরুলিয়ার পল্লিকন্যার মুখ একেবারে ছৌ মুখোশের আদলে। এখন প্রচারে তাবড় নেতাদের পাল্লা দিচ্ছে এই তরুণী। তবে তার প্রচার একটু ভিন্ন। কোনও নির্দিষ্ট দলকে নয়, তার আবেদনে শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগের বার্তা।এই তরুণীর নাম পলাশমণি। পুরুলিয়া জেলা নির্বাচন দপ্তরের ম্যাসকট। শহর থেকে গ্রামের দেওয়ালে তার ছবি। তাতে ভোট দেওয়ার আবেদন— ‘আমি পলাশমণি, আমি দাঁড়াব ভোটের লাইনে। আপনি আসছেন তো?’ দেওয়ালে দেওয়ালে চলছে পলাশমণির অভিনব এই প্রচার। রাজনৈতিক কোনও দল নয়, পলাশমণির দেওয়াল লিখছে নির্বাচন কমিশন।
জেলা নির্বাচনী দপ্তরের আধিকারিক পূর্বিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘পুরুলিয়া জেলার ম্যাসকট পলাশমণি। ছৌ সারা বিশ্বে সমাদৃত। কমিশনের গাইড লাইন মেনে সিস্টেম্যাটিক ভোটার এডুকেশন অ্যান্ড ইলেক্টোরাল পার্টিসিপেশনের মধ্যে এই ম্যাসকটকে তৈরি করা হয়েছে। ছৌ মুখোশের আড়ালে এক জন কমবয়সি মেয়েকে দেখানো হয়েছে, যাতে আদিবাসী ও নতুন ভোটাররা ভোটদানে আকৃষ্ট হন।’
বাস্তবে পলাশমণির আঙ্গিক চোখ টেনেছে নতুন প্রজন্মের। শুধু ভোটদানে উত্সাহিত করা নয়, পলাশমণি যেন ভোটকে বাস্তবে উত্সবের রূপ দিতে চায়। তার মুখে গণতন্ত্রের উত্সব, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা। এবারই প্রথম ভোট দেবে পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা সৌমিলি দে।
আঁকার প্রতি আগ্রহী এই তরুণী বলেন, ‘রাস্তায় যেতে যেতে পলাশমণির দিকে নজর পড়ে যাচ্ছে। তার সাজ-পোশাক খুবই আকর্ষণীয়। বিশেষত ছৌয়ের আদল তার বার্তাকে সহজেই ছড়িয়ে দিচ্ছে।’ আর এক তরুণ ভোটার অমিত মাহাতোর মতে, ‘পলাশ পুরুলিয়ার ঐতিহ্য। পলাশমণি একেবারেই পুরুলিয়ার ঘরোয়া এক কন্যা। সে যেভাবে ভোট দিতে বলছে, তাতে সেদিন আর ঘরে বসে থাকা যাবে না। ভোট দেব, পলাশমণির জন্যেই।’
নিজেদের ভাবনায় জন্ম ম্যাসকটের সাফল্যে বেশ উচ্ছ্বসিত জেলা নির্বাচন দপ্তর। ভোটের দিন ভোটারদের বুথমুখী করার জন্য এই ম্যাসকটের প্রচার আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন দপ্তরের কর্তারা। আগামী ২৫ মে পলাশমণি কত জনকে ভোটের লাইনে নিয়ে আসতে পারে সেটা দেখার জন্যই অপেক্ষা করছেন তাঁরা।