জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই।’ ট্রফির মুখ না দেখেও আর কত বছর একটা ফ্র্য়াঞ্চাইজি লড়বে! ১৬ বছর পেরিয়ে ১৭ বছরেও সেই লড়াই অব্য়াহত। দলটির নাম রয়্য়াল চ্য়ালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Royal Challengers Bengaluru)! চিন্নাস্বামীতে ডু-অর-ডাই ম্য়াচে পাঁচবারের ও গতবারের চ্য়াম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংসকে (Chennai Super Kings) ২৭ রানে হারিয়ে আরসিবি চলে গেল প্লেঅফে। হয়তো আরসিবি-র ডাই-হার্ড সমর্থকও পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না যে, আরসিবি করে দেখাবেই। কিন্তু লাল ফেরাল হাল। করল কামাল। জয়ের মুহূর্ত আসতেই আরসিবি-র ডাগআউট-সহ পুরো চিন্নাস্বামী আবেগের মহোৎসবে ভেসে যায়। আর ঠিক তখনই জন্ম নেয় এক হৃদয় ভেজানো দৃশ্য়। সৌজন্যে বিরাট কোহলি ও অনুষ্কা শর্মা (Virat Kohli And Anushka Sharma, Virushka)।
আরসিবি প্লেঅফ নিশ্চিত করার পরেই, ক্য়ামেরার ফোকাসে ছিলেন কোহলি, ফাফ দু প্লেসিস ও গ্লেন ম্য়াক্সওয়েল। সকলেই মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে সেলিব্রেশনের জোয়ারে ভেসে গিয়েছিলেন। আর এর সঙ্গেই ক্য়ামেরার ফোকাস ছিল গ্য়ালারিতে। দেখা গেল বিরাটের সবচেয়ে বড় ফ্য়ান অনুষ্কা শর্মাও স্ট্য়ান্ড ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে, হাত মুষ্টিবদ্ধ করে অবিকল বিরাটের মতোই সেলিব্রেট করছেন। এবার যখন ক্য়ামেরা বিরুষ্কাকে জুম করে, তখন দেখা যায় যে, স্বামী-স্ত্রীর চোখ ছলছল করছে। যে ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নেটপাড়াও আবেগি হয়ে গিয়েছে। হওয়ারই ছিল যে।
২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আরসিবি নক্ষত্র বিরাট কোহলি জানিয়ে ছিলেন যে, আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপই কুড়ি ওভারের ফর্ম্যাটে জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে তাঁর শেষ অভিযান। আর তার ঠিক তিনদিন পরেই কোহলি আরসিবি-র অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলেন। তাঁর জুতোয় পা গলান ফাফ দু প্লেসিস। ২০০৮ সাল থেকেই কোহলি আরসিবি-র হয়ে আইপিএল খেলছেন। ২০১১ সালে অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে সঁপে দেওয়া হয়। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে ১০ বছরে একবারও আইপিএল ট্রফি দিতে পারেননি বিরাট। ফলে তাঁর কষ্ট, তাঁর অপ্রাপ্তির অপরিমেয়। আর সেই বিরাটের সঙ্গে প্রেমের দিন থেকেই, অনুষ্কা আরসিবি-র প্রতি ম্য়াচে থাকেন গ্য়ালারিতে। বিরাট ঘরণী স্বামীর ঘাম-কান্না সবই যে মেখে নিলেন।
আরসিবি এখনও পর্যন্ত তিনবার আইপিএল ফাইনাল খেলেছে। রাহুল দ্রাবিড় থেকে শুরু করে কেভিন পিটারসেন, অনিল কুম্বলে, ড্য়ানিয়েল ভেট্টোরি, বিরাট , শেন ওয়াটসন (স্ট্য়ান্ড-ইন) ও ফাফ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে ট্রফি কেউ দিতে পারেননি। আরসিবি-র পুরুষ দল ট্রফি না জিততে পারলেও, এই ফ্র্যাঞ্চাইজির মেয়েরা ইতিহাস লিখেছেন উইমেনস প্রিমিয়র লিগে। অভিষেকের পরের বছরেই স্মৃতি মন্ধানারা। আরসিবি-র ছেলেরা যা ১৬ বছরে করতে পারেননি, তা মাত্র দু’বছরে করে দেখিয়েছেন আরসিবি-র মেয়েরা। এবার বিরাটদের সামনে রয়েছে ফের ট্রফিতে কামড় দেওয়ার সুযোগ। বিরাটদের এবার সত্য়িই বুঝে নেওয়ার দিন। সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে ধার করেই বলা যেতে পারে, ‘তিল তিল মরণেও জীবন অসংখ্য/ জীবনকে চায় ভালোবাসতে।’